ডেসটিনি গ্রুপে প্রশাসক নিয়োগ দিচ্ছে সরকার

মুদ্রা পাচারের মামলায় ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট ও এমডি কারাগারে যাওয়ার পর বাণিজ্য সচিব এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই পদক্ষেপ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2012, 06:31 AM
Updated : 11 Oct 2012, 06:31 AM
ঢাকা, অক্টোবর ১১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- কোম্পানি আইন সংশোধনের মাধ্যমে এক সপ্তাহের মধ্যে ডেসটিনি গ্রুপে প্রশাসক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার।
মুদ্রা পাচারের মামলায় ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট ও এমডিকে আদালত কারাগারে পাঠানোর পর বৃহস্পতিবার বাণিজ্য সচিব গোলাম হোসেন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, প্রশাসক নিয়োগের নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন।
সচিব বলেন, “আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রশাসক নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে। কিন্তু কোম্পানি আইনে নিবন্ধিত কোনো প্রতিষ্ঠানে সরাসরি প্রশাসক নিয়োগ করা যায় না। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেওয়া হবে। প্রয়োজনে কোম্পানি আইন সংশোধন করে প্রশাসক নিয়োগ করা হবে।”
প্রশাসক নিয়োগের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “এই গ্রুপের সঙ্গে অনেকের জীবিকা যুক্ত আছে। তাই ডেসটিনির কোনো সম্পদ যেন বেহাত না হয় এবং এ সম্পদ যেন জনগণ বা তাদের সদস্যদের সম্পদ হয়, সেজন্যই প্রশাসক নিয়োগ করা হবে।”
অবৈধ ব্যাংকিং চালানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত এপ্রিলে ডেসটিনি গ্রুপের কার্যক্রম খতিয়ে দেখার সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি। এরপর ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন ও তার স্ত্রীসহ গ্রুপের শীর্ষ পাঁচ ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে ব্যাংকগুলোতে চিঠি দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সচিব জানান, প্রশাসক নিয়োগের পর ব্যাংক হিসাব থেকে শুরু করে অন্যান্য কাজ প্রশাসকের অধীনেই পরিচালিত হবে।
সরকারের নিয়োগ পাওয়া প্রশাসক ডেসটিনি গ্রুপের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ সমন্বয় করবেন। তাকে সহযোগিতায় কয়েকজন সহকারী প্রশাসকও নিয়োগ দেয়া হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি দিয়ে শুরু হওয়া ডেসটিনি গ্রুপের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তা তদন্ত কমিটি করে।
বৃহস্পতিবার বিকালে ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের জানান বাণিজ্য সচিব।
গোলাম হোসেন বলেন, “ডেসটিনিতে দুই ধরনের আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। এতে তহবিল তসরুপ হয়েছে ১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা এবং সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। এ হিসেবে মোট অনিয়ম হয়েছে ৩ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকার।”
অনিয়মের এই তদন্তের মধ্যে গত ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট, সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ ও এমডি রফিকুল আমিনসহ ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পর পাচারের অভিযোগে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেশন (এমএলএম) ও ট্রি-প্লান্টেশেন প্রকল্পের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া অর্থ পাচারের ‘প্রমাণ’ পেয়ে মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দুটি করেন।
ওই দুই মামলার আসামিদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট হারুন-অর-রশিদ, এমডি রফিকুল আমিন ও চেয়ারম্যান মো. হোসেন বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমকে/এসএইচএ/এমআই/১৮৫৮ ঘ.