'তারা আমাদের কাজ সহজ করে দিয়েছে'

সংবিধানের কিছু বিধান পরিবর্তনে গণভোটের পদ্ধতি বাতিল করে সরকার ভবিষ্যতে বিএনপির জন্য সংবিধান সংশোধন সহজ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2011, 06:54 AM
Updated : 17 July 2011, 06:54 AM
ঢাকা, জুলাই ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সংবিধানের কিছু বিধান পরিবর্তনে গণভোটের পদ্ধতি বাতিল করে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ভবিষ্যতে বিএনপির জন্য সংবিধান সংশোধন সহজ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
বিগত চার দলীয় জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ মনে করেন, সংবিধানের মৌলিক বিধান বদলে ফেলার পথ বন্ধ করতে যে সংশোধনী আনা হয়েছে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে তাও পরিবর্তন করা সম্ভব।
গত ৩০ জুন সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী সংসদে পাস হয়। এর মাধ্যমে বাতিল হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।
রোববার সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্যরিস্টার মওদুদ বলেন, "সংবিধান পরিবর্তন করা যাবে না বলে বিধান করা হয়েছে। এটা হতে পারে না। চতুর্থ সংশোধনীর মতো এই পঞ্চদশ সংশোধনীও করা হয়েছে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য।"
সংবিধানের মৌলিক বিধানগুলোকে বদলে ফেলার পথ বন্ধ করতে পঞ্চদশ সংশোধনীতে বলা হয়েছে, 'সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথমভাগের সকল অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, নবম ক-ভাগে বর্নিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের অনুচ্ছেদ ১৫০-সহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলোর বিধানবলী সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোনো পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হইবে।'
এ বিষয়ে মওদুদ বলেন, "আগামী নির্বাচনের আগে আমরা (বিএনপির) ইশতেহারে সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি নিয়ে আসবো। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসে সংবিধান পরিবর্তন করে দেব।"
সংবিধানের কিছু বিধান পরিবর্তনে যে গণভোটের বিধান ছিল- তাও বাতিল করা হয়েছে উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, "এটি আমাদেরকেও ভবিষ্যতে সংবিধানে পরিবর্তন আনা সহজ করে দিয়েছে।"
সংবিধান সংশোধনীর বিষয়টি ক্ষমতাসীন মহাজোটের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল না উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, "এ কারণে এই সংশোধনীতে জনগণের ম্যান্ডেট নাই।"
সংবিধান প্রত্যাখ্যান করলে বা ছুঁড়ে ফেলে দিলে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শাস্তির কোনো বিধান সংবিধানে নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
গত ১৩ জুলাই এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা বলেন, আগামী সরকার পরিবর্তনের পর সংবিধানের সংশোধনী ছুঁড়ে ফেলা হবে।
এর প্রতিক্রিয়ায় পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য অশালীন ও অপ্রত্যাশিত। খালেদা জিয়ার ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সুরঞ্জিত বলেন, খালেদার বক্তব্য 'দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন, অসৌজন্যমূলক ও রাষ্ট্রদ্রোহ'।
অবশ্য মওদুদ আহমদ মনে করেন, সুরঞ্জিতের ওই বক্তব্য সঠিক নয়।
"উনি (খালেদা) বলতে চেয়েছেন, এই সংশোধনীতে জনগণের সমর্থন নেই। আমরা জন সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসে তা বদলে দেব," যোগ করেন মওদুদ।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সংবিধান সংশোধন করা হলেও এখনো বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মওদুদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে এখনো সরকার আলোচনার যে কথা বলছে, তা মনভোলানো, লোক দেখানো ও হাস্যকর।"
"যে বিধান ছিলো, তা বাতিল করে দেওয়ার পর এটা নিয়ে কীভাবে আলোচনা হতে পারে," প্রশ্ন রাখেন তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএন/জেকে/১৮৪৮ ঘ.