সংবিধান সংশোধনে বঞ্চিত হয়েছে জনগণ: ড. কামাল

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সমালোচনা করে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে জনপ্রতিনিধিরা রাষ্ট্রের মালিক অর্থাৎ জনগণকে মালিকানা থেকে বঞ্চিত করেছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2011, 04:07 AM
Updated : 17 July 2011, 04:07 AM
ঢাকা, জুলাই ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সমালোচনা করে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে জনপ্রতিনিধিরা রাষ্ট্রের মালিক অর্থাৎ জনগণকে মালিকানা থেকে বঞ্চিত করেছেন।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় বর্তমান সংবিধানের বিপক্ষে আন্দোলন গড়ে তোলার প্রস্তাব দেয় নাগরিক সংগঠন সুজন।
গত ৩০ জুন সংসদে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন বিল পাস হয়। এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলোপের বিরোধিতা করে আসছে বিএনপি। ধর্মনিরপেক্ষতা পুনঃস্থাপনের প্রতিবাদ করছে ইসলামী দলগুলো। অন্যদিকে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখা এবং বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর জাতীয়তার স্বীকৃতি না দেওয়ার সমালোচনা করে আসছে বামপন্থী দলগুলো।
সভায় মূল বক্তব্যে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ৭(ক) অনুচ্ছেদে তুলে ধরেন।
এতে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি সংবিধান বা এর কোনো বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা নষ্ট করার প্রক্রিয়া চালালে বা সমর্থন করলে তা রাষ্ট্রদ্রোহ বলে বিবেচিত হবে।
বাংলাদেশের মূল সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ড. কামাল এ অনুচ্ছেদ সংযোজনের সমালোচনা করে বলেন, "এটি জঘন্য কাজ হয়েছে। এর মানে দাঁড়ায়, প্রতিনিধি বলছে মালিকের ক্ষমতা নেই। এর মাধ্যমে সংবিধানের বিরুদ্ধে কোনো কথা বললে তাকে সর্বো"" শাস্তিযোগ্য একটি অপরাধ করা হয়েছে।"
"অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে সংবিধানকে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করা কঠিন হয়ে গেছে", বলেন তিনি।
সংবিধানে এ ধারা সংযোজনের ফলে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে সভায় বক্তারা মত প্রকাশ করেন।
কামাল বলেন, "এটা এমন একটা সংবিধান হয়েছে যে এর স্বপক্ষে কেউ কথা বলছে না। স্বাধীন কোনো নাগরিককে এর স্বপক্ষে পাওয়াও মুশকিল।"
পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন অহেতুক বলেও মনে করেন তিনি। কামাল বলেন, "সংবিধানে ঘাটতি থাকলে সেটা পূরণের জন্য সংশোধনী করা হয়। তবে পঞ্চদশ সংশোধনী কেন করা হলো, তা কেউ বলতে পারছে না।"
সভার সভাপতি সুজনের সহসভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, "সংবিধানের এ সংশোধনী জনগণের কোনো উপকারে আসেনি। এটা দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।"
সংবিধানের যে সব বিষয়ে 'আপত্তি' রয়েছে, তা নিয়ে একটি গণকমিশন গঠন করে আইনজ্ঞদের মত নিয়ে মানুষকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও জানান তিনি।
সভায় আলোচনায় অংশ নেন শাহদীন মালিক, আসিফ নজরুল, আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, সালমা খান, মিজানুর রহমান খান প্রমুখ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএন/এমআই/১৫৫৫ ঘ.