রাজবাড়ী, এপ্রিল ১১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- রাজবাড়ীতে ২৮ বাউলের চুল-দাড়ি-গোঁফ কাটার ঘটনায় হওয়ার মামলার আসামিরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পাংশা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাসিরউদ্দিন সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে গ্রামের চারপাশে অভিযান চলছে। তবে আসামিরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
আসামিরা হলেন- ইউনুছ ক্বারী (৪০), করিম বাজারী (৬০), জিন্দার সেখ (৫৪), জয়নাল সেখ (৪০), মালেক সেখ (৪৫), রিয়াদ সিকদার (৪২), ইনছান ফরাজী (৬৫), নজরুল ক্বারী (২৮), মোক্তার শেখ (৩৫), ফেলা ক্বারী (৭৫), মোশাররফ মোল্লা (৪৫), শহিদুল (২৮) এবং নুরু খাঁ (৪৫)।
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় লালন ভক্ত ২৮ বাউলকে গত ৪ এপ্রিল 'তওবা' পড়িয়ে তাদের মাথার চুল ও দাড়ি-গোঁফ কেটে দেওয়ার ঘটনায় শনিবার ১৩ জনকে আসামি করে পাংশা থানায় মামলা করেন বাউল মোহাম্মদ ফকির।
৪ এপ্রিল পাংশার হাবাসপুর ইউনিয়নের চররামনগর গ্রামে লালন ভক্ত বাউল মোহাম্মদ ফকিরের বাড়িতে দু'দিনব্যাপী বার্ষিক সাধু সংঘ উৎসব শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লালনভক্ত বাউলরা আসেন। ৫ এপ্রিল সমাপনী দিনে বাউলরা রীতি অনুযায়ী ঢোল ও বাদ্যযন্ত্র অনুষ্ঠান শুরু করে।
পুলিশ বলছে, এ সময় স্থানীয় কিছু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে বাউলদের সঙ্গে শরিয়ত ও মারফত নিয়ে কথা বলা শুরু করে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা বাউলদেরকে ধরে পাশের একটি মসজিদে নিয়ে যায় এবং জোর করে সবার চুল ও দাড়ি-গোঁফ কেটে দেয়।
বাউলের চুল ও দাড়ি কেটে দেওয়ার প্রতিবাদে রোববার রাজবাড়ী শহরে ও পাংশায় বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন সংস্কৃতিকর্মীরা। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।
বিক্ষোভ শেষে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন।
জেলা উদীচীর সভাপতি ডা. সুনিল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক বিশ্বাস, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি জ্যোতি শংকর ঝন্টু, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি আবুল কালাম, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক, জেলা লালন বাউল সংগীত একাডেমির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন মমিন এবং ঘটনার শিকার লালন সংগীত শিল্পী মো. আলাউদ্দিন বক্তব্য দেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/ সিএস/কেএমএস/পিডি/১৯০৩ ঘ.