'সূর্যসেনের আত্মত্যাগ আজো প্রেরণা যোগায়'

'ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় উপমহাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সাফল্যে মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে সংগঠিত চট্টগ্রাম বিদ্রোহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।'

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2011, 10:26 AM
Updated : 31 March 2011, 10:26 AM
চট্টগ্রাম, মার্চ ৩১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- 'ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় উপমহাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সাফল্যে মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে সংগঠিত চট্টগ্রাম বিদ্রোহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।'
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) 'মাস্টারদা সূর্যসেন স্মারক বক্তৃতায়' কলকাতার ইন্সটিটিউট অব হিস্টরিক্যাল স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ড. চিত্তব্রত পালিত এ কথা বলেন।
মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, মাস্টারদার নেতৃত্বে কিছু তরুণ চট্টগ্রামে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তাদের ত্যাগ দেশের কাজে আজো প্রেরণা যোগায়।
প্রথমবারের মতো চবি ইতিহাস বিভাগ এ স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চবি'র ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলাউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সূর্যসেনের সহযোগী শতবর্ষী বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী।
বিপ্লবী বিনোদ বিহারী সেই অগ্নিঝরা দিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মাস্টরদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে আমরা চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র লুট নয়, সংগ্রহ করেছিলাম। মাস্টরদা দেশের বঞ্চিত, অনাহারী, ক্ষুধার্ত মানুষদের দেখিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। এই পথ ধরেই বাংলার পরবর্তী স্বাধীনতা সংগ্রাম গড়ে উঠেছিল।
চবি'র ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, মাস্টারদার ইতিহাস আজ বিস্মৃত হয়ে গেছে। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চবি'র একটি আবাসিক হলের নাম 'মাস্টরদা সূর্যসেন' রাখা হয়েছে।
স্মারক বক্তৃতায় সভাপতিত্ব করেন চবি'র সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দীন।
১৯২১ সালে সূর্যসেনের নেতৃত্বে কিছু তরুণ চট্টগ্রামে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলেন।
১৯২৩ সালের ডিসেম্বরে মাস্টারদার নির্দেশে ও অনন্ত সিংহের নেতৃত্বে প্রকাশ্য দিবালোকে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের কোষাগার লুট করা হয়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সূর্যসেনের পরবর্তী উল্লেখযোগ্য সাফল্য ছিল ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুট।
এক বিশ্বাসঘাতক গ্রামবাসীর সহায়তায় ব্রিটিশরা ১৯৩৩ সালের ১৭ ফেব্র"য়ারি সূর্যসেনকে গ্রেপ্তার করে। ১৯৩৩ সালের অগাস্টে সূর্যসেনের ফাঁসির রায় হয়। ১৯৩৪ সালের ৮ জানুয়ারি ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।
এর আগে চবি ইতিহাস বিভাগ ও বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি আয়োজিত দুইদিনের আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধন করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। সেমিনারে মোট ১৭ টি অধিবেশনে শতাধিক প্রবন্ধ পাঠ করা হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চবি ক্যাম্পাসে চারটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার নগরীর লোকপ্রশাসন কেন্দ্রে বাকি অধিবেশনগুলো অনুষ্ঠিত হবে।
দেশ-বিদেশের প্রায় ২০০ প্রতিনিধি, গবেষক ও ইতিহাসবিদ সেমিনারে অংশ নিচ্ছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এমসি/এইচএ/২২১২ ঘ.