কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত মাটির ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত একটি মাটির ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2011, 10:13 AM
Updated : 15 Feb 2011, 10:13 AM
নওগাঁ, ফেব্র"য়ারি ১৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) - কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত একটি মাটির ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পতিসরে ছেলের নামে কবির গড়া বিদ্যালয় কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশনের এই ঘরটি ভেঙে ফেলা হয় মঙ্গলবার সকালে।
বিদ্যালয়ের উত্তর-পশ্চিম কোণার ঘরটি ভাঙতে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি বলেছে, সেখানে একটি সিঁড়িঘর তৈরি করা হবে।
কবির স্মৃতিবিজড়িত নিদর্শন ভেঙে ফেলায় ভক্ত ও অনুরাগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
১৯৩৭ সালের ২৭ জুলাই রবীন্দ্রনাথ শেষবারের মতো পতিসর থেকে বিদায় নেওয়ার আগে হতদরিদ্রদের জন্য প্রিয় পুত্র রথীন্দ্রনাথ ও পরগনা কালীগ্রামের নামানুসারে পতিসরে এই বিদ্যালয়টি গড়ে তোলেন। তখন থেকেই বিদ্যালয়ের মাটির ঘরগুলোতে নিয়মিত পাঠদান চলছিলো।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিঁড়িঘর নির্মাণের জন্য মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে পুরনো মাটির ঘরটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
রবীন্দ্র গবেষক ও প্রাবন্ধিক আহমদ রফিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "নিঃসন্দেহে রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশনের মাটির ঘরটি রবীন্দ্রনাথের স্মৃতির ধারক ও বাহক। বাঙালি জাতির গৌরবময় ইতিহাসের এই নিদর্শনটি ভেঙে না ফেলে সংরক্ষণ করা উচিত ছিলো। এ মাটির ঘরটি ভেঙে ফেলার অধিকার কারো নেই।"
রবীন্দ্রগবেষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক ড. সাইফুদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, যে মুহূর্তে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথভাবে কবির সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী পালনের মধ্য দিয়ে কবিকে স্মরণ করছে ঠিক সেই মুহূর্তে বিশ্বকবির স্মৃতির এই নিদর্শনটি ভেঙে ফেলার দৃঢ়তা তারা পেল কি করে তা জাতি জানতে চায়।
তিনি আরো বলেন, "আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো ইতিহাস, ঐতিহ্য রক্ষার তাগিদে রথীন্দ্রনাথের মাটির ঘরটি সংরক্ষণ করা। তা না করে ভেঙে ফেলে আমাদেরকে অনেকটাই মর্মাহত করা হয়েছে।"
রবীন্দ্রস্মৃতি সংগ্রাহক এম মতিউর রহমান মামুন বলেন, "আমি ঘরটি রক্ষার চেষ্টা করেছি, কেননা ওই মাটির ঘরটি শান্তি নিকেতনের মাটির ঘরের সমান আবেদন রাখে।
"প্রতিবছর শত শত রবীন্দ্রগবেষক বহির্বিশ্ব থেকে পতিসরে আসেন মাটির ঘরটি এক নজর দেখার জন্য। অদক্ষ পরিচালনা কমিটির কারণে এমন অচিন্তনীয় ঘটনাটি ঘটেছে।"
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিব বলেন, "আমি নতুন মানুষ অতটা বুঝে উঠিনি। ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে ঘরটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঘরটি না ভেঙেও নতুন ভবন নির্মাণ করা যেতো।"
এ ব্যাপারে নওগাঁর জেলা প্রশাসক ড. মোসাম্মৎ নাজমানারা খানম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।"
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এমএসবি/২২০৬ ঘ.