হাতির চলার পথ এখন মানুষের আবাস

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি-নাইক্ষ্যংছড়ি ও রাঙ্গুনিয়া-রাজস্থলী এবং কক্সবাজার দক্ষিণের টেকনাফ-কক্সবাজার-নাইক্ষ্যংছড়ি পথে সারা বছরই ছিলো হাতির যাতায়াত।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2010, 04:04 AM
Updated : 17 Sept 2019, 03:20 AM

উত্তর দক্ষিণ বরাবর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক নির্মাণ, আশপাশে ব্যাপক জনবসতি, রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প স্থাপন এবং ২৪ ঘণ্টা গাড়ি চলাচলে আজ বুনোহাতির চলাচলের এ পথ আর তাদের নেই।

এভাবেই চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, লামা, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও ময়মনিংহ এলাকায় বনবিভাগের হাতি চলাচলের পথ মানুষের দখলে। এ কারণে বুনোহাতির আক্রমণে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন নেচার (আইইউসিএন)-এর উপদেষ্টা আইনুন নিশাত বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "দিনে দিনে সঙ্কুচিত হচ্ছে হাতির অভয়াশ্রম। যেখানে ঋতুভিত্তিক ও খাবারের খোঁজে বছরে গড়ে ৫ বার যাতায়াত করতো হাতিরা, সে পথগুলো এখন মানুষের দখলে। বছরে একবার চলাচল করতো এমন পথগুলো এখন হাতি ব্যবহার করছে।"

২০০৪ সালে বাংলাদেশ বন বিভাগ ও আইইউসিএন পরিচালিত এক শুমারিতে দেখা যায়, দেশে হাতির সংখ্যা ১৯৬ থেকে ২২৭টি। ১১টি বন বিভাগে হাতির বিচরণ রয়েছে। বর্তমানে এ সংখ্যা ২৫০ থেকে ৩৫০ বলে দাবি করা হয়।

এছাড়া আরো ৮৩ থেকে ১০০টি হাতি মিয়ানমারের আরাকান, ভারতের আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম ও ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে আসা যাওয়া করে। চিড়িয়াখানা ও বিভিন্ন সার্কাস মিলিয়ে বন্দি হাতি রয়েছে ৯৪-১০০টি।

ঢাকায় আইইউসিএন-এর সাবেক আবাসিক প্রতিনিধি নিশাত মনে করেন, আবাসস্থল ধ্বংস, চলাচল পথ বা করিডোর বাধাগ্রস্ত, হাতির চলাচল পথে মানব বসতি স্থাপনের কারণে লোকালয়ে বুনো হাতির তাণ্ডব বেড়েছে।

গত কয়েক দশকে বনের ভেতরে মানব বসতির বিস্তৃতির কারণে হাতির আবাস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেন বন অধিদপ্তরের বন সংরক্ষক (বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সার্কেল) তপন কুমার দে।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিপোর ডটকমকে বলেন, “জনবসতি ও রাস্তাঘাট নির্মাণের কারণে হাতির চলাচলের পথ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। হাতির খাদ্য ও পানির অভাবও দেখা দিয়েছে।”