আরও ১৬ সোয়াইন ফ্লু রোগী সনাক্ত

দেশে আরও ১৬ জন সোয়াইন ফ্লু রোগী সনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের নিশ্চিত সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭৫ জনে। তবে বিশেষজ্ঞরা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলছেন, দেশে আক্রান্তদের ৯৮ শতাংশ আপনা-আপনিই সেরে যাবেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2009, 00:43 AM
Updated : 3 Sept 2009, 00:43 AM
ঢাকা, সেপ্টেম্বর ০৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- দেশে আরও ১৬ জন সোয়াইন ফ্লু রোগী সনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের নিশ্চিত সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭৫ জনে।
তবে বিশেষজ্ঞরা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলছেন, দেশে আক্রান্তদের ৯৮ শতাংশ আপনা-আপনিই সেরে যাবেন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর পরিচালক ডা. মো. মাহমুদুর রহমান বৃহস্পতিবার আরও ১৬ জনের সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেন।
তিনি একই সঙ্গে বলেন, "রোগীর সংখ্যা কতো সেটা জরুরি নয়। আমরা এখন সব রোগীর পরীক্ষাও করছি না। লক্ষণ দেখা গেলেই চিকিৎসা নিতে হবে।"
নতুন ১৬ রোগীর মধ্যে তিন জন বিদেশ ফেরত। বাকিরা দেশেই সংক্রমিত হন।
সকালে আইইডিসিআর কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মাহমুদুর আরও বলেন, "আমাদের কাছে অনেক রোগী আসছেন। কিন্তু বাংলাদেশে সোয়াইন ফ্লু'র যে প্রবণতা আমরা দেখছি, তার ৯৮ ভাগ রোগী নিজে থেকেই ভালো হয়ে যাবেন।"
তিনি বলেন, "অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে সংক্রমণের হার অনেক কম। বাকি ২ ভাগের চিকিৎসার দরকার হলেও খুব কম সংখ্যক রোগীরই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার হবে, যাদের অন্যান্য জটিল সমস্যা রয়েছে।"
আইইডিসিআর জানায়, ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকার বাইরের বড় হাসপাতালগুলোর আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাদের ডাকা হচ্ছে। তাদের সোয়াইন ফ্লু'র চিকিৎসা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ ও সর্বশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হবে।
এছাড়া জেলা পর্যায়ে ওষুধের মজুদ বাড়ানো হচ্ছে এবং এখন উপজেলা পর্যায়েও ওষুধ পাঠানো হচ্ছে বলে জানান মাহমুদুর রহমান।
প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১১টায় আইইডিসিআর কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে দেশে সোয়াইন ফ্লুর সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানো হবে বলেন জানান তিনি।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া রোগীদের বিষয়ে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, "বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে আমরা সহযোগিতা করছি। অনেক হাসপাতালে আমরা ওষুধ পাঠিয়েছে। কেউ চাইলেই আমাদের সহযোগিতা পাবেন। তবে তাদের আলাদা ওয়ার্ড এবং অন্যান্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ যাতে এই রোগ অন্য রোগীদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে।"
ইতিমধ্যে ১৫টি বেসরকারি হাসপাতালকে সোয়াইন ফ্লু চিকিৎসা কেন্দ্রের আওতায় আনা হয়েছে জানিয়ে মাহমুদুর বলেন, আরও কিছু হাসপাতালকে চিকিৎসা সেবার আওতায় আনার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
প্রাণঘাতী এ রোগটি গত এপ্রিলে মেক্সিকোয় প্রথম ধরা পড়লেও বাংলাদেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত জুন মাসে। গত ৩০ আগস্ট দেশে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে মিতা চক্রবর্তী একজন মারা যান। এটাই দেশে এ রোগে প্রথম কারও মৃত্যু।
সোয়াইন ফ্লু'র ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিপদসীমার দ্বিতীয় পর্যায় (কান্ট্রি লেভেল-২) অতিক্রম করেছে জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যে বলেছেন, মহামারী পর্যায়ে না পৌঁছালেও এটা তার আগের অবস্থান।
গত ১১ জুন সোয়াইন ফ্লু-কে মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। বিশ্বে এ পর্যন্ত এ রোগে ২ হাজার ১৮৫ জন মারা গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখের বেশি।
উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর, কাশি, কফ এ রোগের লক্ষণ।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এ রোগের ভাইরাস ছড়ায়। রোগ এড়াতে যত্রতত্র কফ, থুথু না ফেলা ও বিশেষ করে হাঁচি-কাশির পর সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসআইটি/কিউএইচ/এমআই/১৩৫০ ঘ.