ঢাকায় ‘অজ্ঞানপার্টি’ ও ছিনতাই চক্রের ১৪ জন গ্রেপ্তার

‘বিষাক্ত মলম’, ‘মরিচের গুড়া’, ‘বিষাক্ত স্প্রে’ কিংবা চেতনানাশক দিয়ে যাত্রীদের সর্বস্ব ‘কেড়ে’ নেওয়ার অপরাধে একটি চক্রের ১৪ জনকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2022, 12:48 PM
Updated : 7 July 2022, 12:48 PM

রামপুরা, মতিঝিল, পল্টন ও শাহজাহানপুর এলাকায় বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এসময় দুটি কাঁচি, দুটি এন্টিকাটার, চারটি ব্লেড ও ১২টি বিষাক্ত মলম উদ্ধার করা হয় বলে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জানান র‍্যাব-৩ এর পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস।

কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখেমুখে বিষাক্ত মলম, মরিচের গুড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে যাত্রীদের সর্বস্ব কেড়ে নেয় এই চক্রের সদস্যরা।”

তিনি জানান, ‘অজ্ঞানপার্টি’ ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। রাজধানীর বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও রেল স্টেশনের আশেপাশে তারা তৎপর ছিলেন।

তাদের কৌশলের কথা জানিয়ে র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, “সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনও তাদেরকে ডাব, কোমল পানীয় কিংবা পানির সাথে বিষাক্ত চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে।

“আবার কখনও যাত্রীবেশে বাস ও ট্রেনে চড়ে যাত্রীদের পাশে বসে তাদের নাকের কাছে চেতনানাশক ওষুধে ভেজানো রুমাল দিয়ে যাত্রীদের অজ্ঞান করে থাকে তারা।”  

এ চক্রের গ্রেপ্তার ১৪ সদস্যের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলেনে জানায় র‍্যাব। 

এরা হলেন- মো. মানিক (২৮), মো. হৃদয় (২০), মো. ওমর ফারুক (২৪), মো. শরিফুল ইসলাম (২২), মো. এনামুল হক (২২), মো. সুজন (২৮), মো. আশরাফুল ইসলাম (২২), মো. সোহাগ (২০), মো. রাসেল (২৫), মো. মনির হোসেন (২৪), মো. সুজন মিয়া (২০), মো. বাহারাম (৪৮) সুমন হোসেন (৪৫) ও হারুন সরদার (৫৫)।

তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার কথাও বেরিয়ে এসেছে জানিয়ে র‍্যাব-৩ এর পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বলেন, “সংঘবদ্ধ চক্রের এই সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে ওৎ পেতে থাকত।

“সুযোগ পেলেই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা রিকশা যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে সঙ্গের সবকিছু ছিনিয়ে নিত।”

তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড এবং রেল স্টেশন এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত সময়ে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠত বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে রাজধানীর যে সব এলাকায় ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি দেখা যায় সেসবের একটি তালিকা তুলে ধরা হয়।

এলাকাগুলো হচ্ছে- খিলগাঁও, মালিবাগ, রেল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালবার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ ও বাসাবো ক্রসিং।