বুধবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাজিব হাসানের কাছে তার খাসকামরায় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
জিতুর বাবা উজ্জ্বল হাজীও এর আগে মঙ্গলবার উৎপল হত্যাকাণ্ডে ছেলের সম্পৃক্ততা নিয়ে ঢাকার আরেক হাকিমের কাছে জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
১৯ বছর বয়সী ওই তরুণকে রিমান্ডে নিয়ে পাঁচ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বুধবার আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক এমদাদুল হক।
তার আবেদনে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাজিব হাসান আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উৎপল কুমার সরকার ছিলেন ঢাকার আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি। জিতু ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণিতে পড়তেন।
গত ২৫ জুন দুপুরে জিতু স্কুলমাঠে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে উৎপলকে গুরুতর আহত করেন। দুদিন পর হাসপাতালে মারা যান উৎপল।
এ ঘটনায় উৎপলের ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। ২৯ জুন জিতুকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা গ্রামে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
জিতুর আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে জিতুর বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উজ্জ্বল হোসেন ও জিতু দুজনকেই পাঁচ দিন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়।
ঘটনার বর্ণনায় ওই কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেছিলেন, “আমাদের স্কুলে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। দুপুরে মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা উৎপলকে হঠাৎ করে এসে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে ওই ছাত্র।”
ভাই অসীম সরকার বলছেন, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার ওই ছাত্রকে শাসন করেছিলেন উৎপল। সেই কারণেই হামলা হয় বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
আর জিতুকে গ্রেপ্তারের পর র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, স্কুল ক্যাম্পাসে বান্ধবীকে নিয়ে ঘোরাফেরা করতে জিতুকে ‘নিষেধ করেছিলেন’ শিক্ষক উৎপল সরকার; সেই ক্ষোভ আর ‘হিরোইজম দেখানোর চেষ্টায়’ জিতু তাকে স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছিলেন।
মামলার এজাহারে জিতুর বয়স ১৬ থাকায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সীদের অপরাধের বিচার হয় কিশোর আইনে। তবে জিতুর জুনিয়র দাখিল পরীক্ষার সার্টিফিকেট দেখিয়ে র্যাব বলেছে, তার বয়স ১৯ বছর। তা হলে তাকে প্রাপ্তবয়স্ক ধরেই বিচার হবে।