নর্থ সাউথে ‘অনিয়ম’: এক আসামিকে খুঁজে পাচ্ছে না পরিবার

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলার আসামি আমিন মো. হিলালীকে খুঁজে পাচ্ছে না তার পরিবার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2022, 03:48 PM
Updated : 2 July 2022, 03:48 PM

উত্তরা পশ্চিম থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে শুক্রবার অভিযোগ করে বলা হয়েছে, আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী (৫৬) শুক্রবার সকাল ৮টায় বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসেননি। তিনি উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টর থেকে ১৩ নম্বর সেক্টরে অফিসের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন।

তার ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম হিলালী এ অভিযোগে বলেছেন, উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টেরের বাসা থেকে বের হওয়ার পর গাড়িচালক জামাল উদ্দিনের সঙ্গে হিলালীর মোবাইল ফোনে কথা হয়।

তিনি গাড়িচালককে বলেন, চালক যেন ১৫ মিনিট পর তার (আমিন মো হিলালী) সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ এবং বাসায় ফিরে আসেননি।

উত্তরা বিভাগের উপ কমিশনার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিষয়টি তারা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছেন। এরই মধ্যে নিখোঁজের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

“আমরা চেষ্টা করছি তার সন্ধান পেতে।”

রফিকুল ইসলাম হিলালী শনিবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শুক্রবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে চালকের সঙ্গে কথা হয়। চালকের দেরি হওয়ার কারণে তাকে বাসা না গিয়ে ১৩ নম্বর সেক্টরে অফিসে যেতে বলেন। এরপর উনি হেঁটেই অফিসে রওনা দেন।

“৮টা ২২ মিনিটে ১২ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর রোডে যখন তিনি ছিলেন, তখন ভাবির সাথে সর্বশেষ কথা হয়, যেখানে গৃহপরিচারিকাকে বিকাশে টাকা দেওয়ার জন্য বলেন। আর সেটাই শেষ কথা। এরপর মোবাইল বন্ধ। ধারণা করা হচ্ছে এই রোড থেকে তিনি মিসিং হন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি কেনার শত কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগে দুদক আশালয় হাউজিংয়ের এমডি আমিন হিলালীসহ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, চার ট্রাস্টি এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করে।

মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের অনুমোদন/সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমির দাম ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ করা হয়েছে।

এই ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, “বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে বিক্রেতার নিকট থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরবর্তীতে নিজেরা উক্ত এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।

“অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয়ের অবস্থান গোপনের জন্য উক্ত অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তর মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেন।”

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১০ অনুযায়ী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ।

এর মধ্যে চারজন এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান কারাগারে আটক রয়েছেন। গত ৩০ জুন তারা জামিনের আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করেছে।