এসআই গৌতম হত্যা: সাক্ষী আসছে না, তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন

এক যুগ চলে গেছে, কিন্তু ঢাকার বংশাল থানার এসআই গৌতম কুমার রায় হত্যার বিচার শেষ হয়নি। অভিযোগ গঠনের পর ১০ বছরে সাক্ষ্য দিয়েছেন মাত্র দুজন।

গোলাম মর্তুজা অন্তু জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2022, 06:44 PM
Updated : 2 July 2022, 08:10 PM

নিহত এই পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের প্রশ্ন, মোট ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণেই যদি ১০ বছর লেগে যায়, বাকিদের সাক্ষ্যগ্রহণে কত বছর লাগবে? তাছাড়া ‘হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায়’ খুনি কারা বা খুনিদের শাস্তিই বা কিভাবে নিশ্চিত হবে, তা নিয়েও আশ্বস্ত হতে পারছে না গৌতমের পরিবার।

ঘটনার এক মাস পর তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার দাবি করেছিলেন, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তল দুটি ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে।

কিন্তু সিআইডির ল্যাবে করা আলামত পরীক্ষার ফল বলছে, পুলিশ বিস্ফোরক পরীক্ষার জন্য যে দুটি অস্ত্র, গুলি (তিনটি) ও গুলির খোসা (তিনটি) পাঠিয়েছিল, সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা গেছে- ওই সব গুলি ওই দুটি অস্ত্র (উদ্ধার করা) থেকে ছোড়া হয়নি।

গৌতমের ভাই তিলক রায় বলেন, “হত্যার পর থেকেই আমরা বলছি যে, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আর পুলিশ এটাকে তখন থেকেই ‘দুর্ঘটনাবশত’ হত্যাকাণ্ড হিসেবে বলেই যাচ্ছে। এটা আমাদের কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। আমরা মামলার তদন্ত সিআইডিকে দিতে বলেছিলাম, বিচার বিভাগীয় তদন্তও চেয়েছিলাম। তবে তার কোনোকিছুই হয়নি।

“পুলিশ এখনও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করতে পারেনি। চার্জশিটে যে চারজনকে হত্যাকারী হিসেবে উল্লেখ করেছে, তাদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার হলেও সেগুলো হত্যায় ব্যবহৃত হয়নি। তাহলে তারা হত্যাকারী হলো কী করে?”

২০১০ সালের ২০ এপ্রিল মধ্যরাতে বংশাল থানার অপারেশন অফিসার গৌতম রায় সূত্রাপুর এলাকায় গুলিতে খুন হন।

দুদিন বাদে ২৩ এপ্রিল সূত্রাপুর থানা পুলিশ আহমেদ ওরফে হায়দার ওরফে হাদি নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে,যিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এর দুদিন পরেই র‌্যাব আলী হায়দার এবং জাকির হোসেন নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে এবং ২৬ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করে, গৌতম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

সে দিনই র‌্যাব এই দুইজনকে গৌতম হত্যা মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কাছে হস্তান্তর করে।

ফলে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া হায়দার এবং এর আগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া হায়দারকে নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তি দেখা দেয়।

এর এক দিন বাদে ২৮ এপ্রিল পুলিশের গোয়েন্দা শাখা জাকির হোসেন ওরফে কাইল্যা জাকির ওরফে বাইট্যা জাকির নামে একজনকে গ্রেপ্তার করলে পুরো ঘটনায় জট পাকিয়ে যায়।

সেসময় এ নিয়ে পুলিশ ও র‌্যাবের মধ্যে মতবিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেয়। ‘নিরপরাধ’ দুজনকে র‌্যাব নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেছে বলে পুলিশের তরফে অভিযোগ করা হয়। এ পরিস্থিতিতে তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ ডিএমপি ও র‌্যাবের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। পরবর্তীতে অভিযোগপত্র থেকে র‌্যাবের গ্রেপ্তার করা আলী হায়দার ও জাকিরকে বাদ দেয় তদন্ত সংস্থা ডিবি।

তবে মামলার নথিতে এই হায়দার ও জাকিরের যে জবানবন্দি যুক্ত আছে, তাতে র‌্যাবের নির্যাতনের কথা বলা হলেও কারা এই নির্যাতন করল, তা খুঁজে দেখেননি তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা।

মামলায় কী বলা আছে

এজাহারের বিবরণ অনুযায়ী, ঘটনার দিন রাত ২টার দিকে এসআই গৌতম তার পূর্ব পরিচিত শামীম হোসেনের গাড়িতে ওয়ারীর ভাড়া বাসার উদ্দেশে রওনা করেন। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন শামীমের গাড়িচালক মো. আজম। লালমোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় শামীমের বাসার সামনে এসে গাড়িটি রেখে তারা ধোলাইখালের রাস্তার উত্তর পাশের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন।

এ সময় গলির মুখে দাঁড়ানো তিনজনকে তল্লাশি করতে যান এসআই গৌতম। তখন সন্দেহভাজনদের কেউ গৌতমকে গুলি করে। বুকের বাম পাশে ও কোমরের পেছন দিকে দুই গুলিতে বিদ্ধ হয়ে মারা যান এসআই গৌতম।

নিহত গৌতমের ভাই তিলক রায় টুলুর দাবি, পরিবারের পক্ষ থেকে তারা মামলা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের মামলার বাদী হতে দেয়নি। পক্ষভুক্ত না হওয়ায় তারা মামলাটিকে এগিয়ে নিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি।

তার ভাষ্য, “দাদা মারা যাওয়ার পর পুলিশ এত সিরিয়াসনেস দেখালো যে আমাদেরকে মামলার বাদী পর্যন্ত হতে দিল না। আমি বাদী হইতে চাইলাম, তখন ডিএমপির কমিশনার শহীদুল (হক) স্যার বললেন, ‘পুলিশ খুন হইছে, পুলিশ মামলা করবে। আমরাই মামলা দেখভাল করব’। এখন দেখেন কী অবস্থা! ১২ বছরে মোটে দুজনের সাক্ষ্য সম্পন্ন হয়েছে।”

‘নির্যাতিত’র জবানবন্দি, র‌্যাব-পুলিশ পাল্টাপাল্টি

ডিবি পুলিশ মামলার নথিতে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া হায়দার আলী ও জাকির হোসেন দুজনেরই জবানবন্দি (ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬১ ধারায়) যুক্ত করেছে। তখন হায়দার আলী ভাঙারি লোহার ব্যবসা করতেন আর জাকির হোসেন ধোলাইখালে মোটরপার্টসের দোকানে কাজ করতেন।

আলী হায়দার তার জবানবন্দিতে বলেছেন, গৌতম হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর ২২ এপ্রিল রাতে তাকে পুরান ঢাকার বাসা থেকে র‌্যাব পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নির্যাতন চালিয়ে তাকে বলা হয়, “তুই দারোগা গৌতমকে হত্যা করছিস। তোর সঙ্গে কাইল্যা জাকির, মানিক ছিল। যদি এই কথা না বলিস তাহলে তোকে গুলি করে মেরে ফেলব।”

গৌতমকে চেনেন না বলার পর আরও নির্যাতন চালানো হয় বলে হায়দারের অভিযোগ।

জাকির তার জবানবন্দিতে বলেন, ২৫ এপ্রিল ধোলাইখালে কর্মস্থল থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায় র‌্যাব। তাকেও নির্যাতন চালিয়ে বলা হয়, “তুই কালা জাকির, দারোগাকে তুই গুলি করে খুন করছিস, কীভাবে খুন করছিস বল।”

এসআই গৌতম হত্যার পাঁচ দিন পর ২৬ এপ্রিল হায়দার ও জাকিরকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাব। ওই সংবাদ সম্মেলনে হায়দার বলেন, কাইল্যা জাকির দারোগা গৌতমকে গুলি করেছে, তিনি ও মানিক সঙ্গে ছিলেন। একই সংবাদ সম্মেলনে জাকির হোসেন বলেন, হায়দার দারোগা গৌতমকে গুলি করেছে। তিনি ও মানিক সঙ্গে ছিলেন।

তবে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের নির্যাতনের মুখে শিখিয়ে দেওয়া কথাই হায়দার ও জাকির বলেছিলেন বলে দাবি করেন পুলিশের কর্মকর্তারা।

২০১০ সালের ২১ মে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের তৎকালীন কমিশনার শহীদুল হক বলেন, “তাদের (র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া জাকির ও হায়দার) রিমান্ডে আনার পর জিজ্ঞেস করেছিলাম র‌্যাবের কাছে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে কেন? তারা বলেছে, ‘স্যার, ভয়ে স্বীকার করেছি’।”

অভিযোগপত্র

এক বছর তদন্তের পর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া হায়দার ও জাকিরকে বাদ দিয়ে পুলিশ ২০১১ সালের ২৭ মার্চ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এই চারজন হলেন- আহম্মেদ আলী ওরফে হায়দার ওরফে হাদী, জাকির হোসেন ওরফে কাইল্যা জাকির ওরফে বাইট্যা জাকির ওরফে সেলিম, জামান মল্লিক ও আবদুর রউফ ভূইয়া ওরফে সোহেল।

এদের মধ্যে প্রথম তিনজন হত্যার ঘটনাস্থলে সরাসরি ছিলেন এবং আব্দুর রউফ ভুঁইয়া আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবে অভিযোগপত্রে আসামি হন। আসামিদের মধ্যে কেবল আহম্মদ আলী নিজে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০ এপ্রিল রাতে জাকির, আহম্মদ আলী এবং জামান মল্লিক মিলে ইয়াবা সেবন করে রাত সোয়া ২টার দিকে ধোলাইখাল এলাকায় হাঁটতে বের হয়। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা গৌতম সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় ওই এলাকায় এত রাতে তাদের অবস্থানের কারণ জানতে চায় এবং তল্লাশি শুরু করে। আহম্মদ আলীকে তল্লাশি শেষে এসআই গৌতম অন্যদের তল্লাশি করতে উদ্যত হলে জাকির ও জামান মল্লিক তাদের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে এসআই গৌতমকে গুলি করে।

হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র কোথায়?

ওই ঘটনার পর পুলিশ জাকির ও জামান মল্লিকের দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের কথা জানায় মামলার তদন্ত কর্তৃপক্ষ ঢাকা মহানগর ডিবি। মামলার আলামত হিসেবে ডিবি ওই দুটি অস্ত্রের সঙ্গে হত্যার ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত তিনটি গুলির খোসা এবং নিহতের দেহ থেকে পাওয়া তিনটি গুলি পরীক্ষার জন্য পুলিশেরই আরেক শাখা সিআইডির ল্যাবরেটরিতে পাঠায়।

তবে সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক ও বিস্ফোরক বিশারদ এগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদনে বলেন, পুলিশ যে গুলির নমুনা ল্যাবে পাঠিয়েছেন, সেগুলো ওই দুটি অস্ত্র (উদ্ধার করা) থেকে ছোড়া হয়নি।

পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার না করেই মামলার তদন্তের যে ইতি টেনেছে, তা নিয়েও এখন প্রশ্ন তুলছেন নিহত এসআই গৌতমের ভাই তিলক রায় টুলু।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রই এখনও পুলিশ উদ্ধার করতে পারলো না। যাদের ধরছে ওরাই যদি প্রকৃত হত্যাকারী হয়, তাহলে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি গেল কোথায়?”

পুলিশের দেখানো আলামতের মধ্যে আসামি আব্দুর রউফ ভুঁইয়া সোহেলের একটি প্রাইভেটকারও ছিল। পরবর্তীতে আদালত গাড়িটি প্রকৃত মালিকের জিম্মায় দিয়ে দেয়।

সাক্ষ্য আসে না কেন?

২০১৮ সালের ২১ মে মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী মো. সোহেল আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন। তবে সোহেল আদালতকে কেবল বলেছেন, ‘আমি কিছুই জানি না, এ সম্পর্কে।’

এরপর গত চার বছরে আর কেউ সাক্ষ্য দেননি।

২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারিতে বিচারের জন্য ৯ নম্বর বিশেষ দায়রা আদালতে মামলাটির নথিপত্র স্থানান্তর করা হয়। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর মামলার তিন থেকে পাঁচ নম্বর সাক্ষীকে আদালতে হাজিরের জন্য অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তবে আজ পর্যন্ত তারা আদালতে গিয়ে সাক্ষ্য দেননি।

২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানির তারিখ ছিল। ওইদিনও কোনও সাক্ষী না আসায় আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান তার আদেশে লেখেন, “একাধিক তারিখে সাক্ষ্যের জন্য দিন ধার্য থাকলেও আদালতে পুলিশ কর্তৃক সাক্ষী হাজির না করায় মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে। উক্ত কারণে একদিকে যেমন রাষ্ট্রপক্ষের ব্যয়ভার বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরদিকে আসামি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”

২০২০ সালে কোভিড মহামারী শুরু হওয়ার পর বিচারকাজে আরও ভাটা পড়ে। ওই বছরের ১৪ অক্টোবর থেকে হাজিরা দিচ্ছেন না জাকির হোসেন। বাকি তিনজন অবশ্য হাজিরা দিয়ে যাচ্ছেন।

আদালতে সাক্ষী হাজিরের দায়িত্ব পুলিশের, সে কথা মনে করিয়ে দিলে ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ কমিশনার জাফর হোসেন সোমবার বলেন, “যদি সমন ইস্যু হয়ে থাকে, তাহলে সেটা পুলিশের কাছে আসছে কি না, সেটা একটু দেখতে হবে। সমন যদি ইস্যু হয়ে থাকে, তাহলে সাক্ষী আনা হয়েছে কি না বা কোথায় কী হয়েছে, তা পুরোটা জেনে আমি জানাতে পারব। তবে পিপি বা এপিপি আমাদের কখেনোই বলে নাই যে এই মামলা সাক্ষীর জন্য আটকে আছে।”

কয়েকদিন পর ডিসি প্রসিকিউশন জাফর হোসেন খোঁজখবর নিয়ে বলেন, “মামলার গত পাঁচটি শুনানির তারিখে সাক্ষী হাজিরের কোনো সমন ইস্যু করেননি আদালত, যার কারণে পুলিশের পক্ষে বিষয়টি জানা সম্ভব হয়নি। কেন সমন ইস্যু করা হচ্ছে না তা বলতে পারবেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ কর্মকর্তা এবং পিপি-এপিপিরা। এসবের কারণে আমাদের একজন পুলিশ সহকর্মী হত্যার শিকার হয়েও বিচার পাচ্ছে না।”

জানতে চাইলে ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বেলায়েত হোসেন ঢালী বলেন, “মামলাটি অন্য কোর্ট থেকে এই কোর্টে এসেছে। মামলার কার্যক্রমে কোনও স্থিতাবস্থা নেই। এর কার্যক্রম চলছে।”

কেন সাক্ষীদের সমন পুলিশ পাচ্ছে না, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আরও খোঁজ খবর নিতে হবে।”

এ পরিস্থিতি নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নিহতের ভাই তিলক। তিনি বলেন, “আমরা বাদী হইলে অন্তত মামলাটাকে এর চেয়ে গতিশীল রাখতে পারতাম। মামলা কেন গতি পায় না... এ নিয়ে তো আমাদেরকে অনেকে অনেক কথা বলছে।”

কী কথা শুনেছেন- জবাবে তিলক পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিরোধের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “এখন আমাদের সন্দেহ হয়, এ কারণেই মামলার বিষয়ে পুলিশের কোনো গরজ নেই। আবার পুলিশের গ্রেপ্তার করা আসামিরা সব জামিনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমরা বিচার চেয়েই মরছি।”