শুক্রবার বিকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ ব্যানারে আয়োজিত এ সমাবেশে গান, কবিতা ও নাটক পরিবেশনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হয়।
সমাবেশের শুরুতে হলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া নাট্যকার অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর উত্তরার বাসায় জুমার নামাজের পর হামলার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
রাষ্ট্রের প্রশাসন, আইন, বিচারব্যবস্থার ‘অনিয়মের’ চিত্র তুলে ধরে সমাবেশে মুকাভিনয় পরিবেশন করে প্রাচ্যনাটের শিল্পীরা। আর শিল্পী স্নিগ্ধা ফেরদাউস সামাজিক অসহিষ্ণুতার চিত্র তুলে ধরেন তার 'আমার বাংলাদেশ' শিরোনামের একক মুকাভিনয়ে।
বর্তমান সময়ে শিক্ষকের অবস্থা তুলে ধরে 'বিনির্মাণ' শিরোনামে একটি নাটক পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন 'বটতলা'। সংগীত ও কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন শিল্পীরা।
সিপিবি সভাপতি শাহ আলম অনুষ্ঠানে বলেন, নারায়ণগঞ্জে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে উঠবস করানো হয়েছিল। হৃদয় মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এখন স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরাতে দেখা গেল, উৎপলকে হত্যা করা হল।
“এগুলো সামাজিক বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে প্রচার করা হচ্ছে। এর সাথে কোনো যোগসূত্র আছে কি না, এটা খুঁজে বের করা দরকার। কেননা এসব ঘটনায় গোটা সমাজকে সাম্প্রদায়ীকীকরণ করা হচ্ছে, সাম্প্রদায়িকতা সামাজিকীকরণ হয়ে গেছে, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো হচ্ছে।”
“আমরা দেখি, তাদের কাছে আর কোনো এজেন্ডা নাই। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার প্রবলেম সলভ হয়ে গেলে, তাহলে লড়াইয়ের মূল এজেন্ডা হয়ে যাবে ভাত-কাপড়। তাই এটাকে সলভ না করে ব্যবহার করছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জোবায়দা নাসরীন বলেন, “আপনারা জানেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ফাহমিদা হকের উপর ও অধ্যাপক রতন সিদ্দিকীর বাসায় আক্রমণ হয়েছে। কী কারণে হয়েছে, আপনারা বুঝতেই পারছেন।
“শুধু নাম দিয়ে এখন আর সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু বিবেচিত হচ্ছে না। যারা অমুসলিম, তারা প্রথম টার্গেট। যারা মুসলিম নাম হয়েও এই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়ছে, তারাও আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। এই সাম্প্রদায়িকতাকে এখনই থামানো উচিত। এখনই বড়সড় আন্দোলন দরকার।“
যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুমের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ডা. মোজাহিদুল হক রিপন, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের নেতা নাসিমুল আরা হক, গৌরব৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন, ছাত্র ইউনিনের সাবেক নেতা শরিফুজ্জামান শরিফ।