বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেওয়া সেই হামলার ষষ্ঠ বার্ষিকীতে নিহত পুলিশ কর্মকর্তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গুলশান পুরনো থানার সামনে জড়ো হয়েছিলেন নিহতদের পরিবার ও সহকর্মীরা। এসেছিলেন সেই অভিযানে আহত হওয়া কর্মকর্তারাও।
২০১৬ সালের ১ জুলাই সন্ধ্যায় গুলশান লেকের পাড়ে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় একদল উগ্রবাদী করুণ। তারা গলা কেটে এবং গুলি চালিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে।
হলি আর্টিজানে জিম্মি হয়ে পড়া দেশি-বিদেশিদের উদ্ধারে অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের হামলায় নিহত হন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল করিম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন খান।
রেমকিম বলেন, “আমি অনেক চেষ্টা করেও কোনোদিন তাদের বাবার জায়গা নিতে পারব না। ছোটো ছেলেটা তখন কেজিতে পড়ত, এখন ক্লাস সিক্সে পড়ে। আর মেয়েটা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। বাবা ছাড়া সন্তানদের বড় করা খুবই কঠিন।”
কঠিন হলে হাল ছাড়েননি রেমকিম। একটি পোশাকের ব্যবসা তিনি দাঁড় করিয়েছেন। বড় মেয়ে দেশের বাইরে পড়ছেন। ছোটটা এখনও স্থানীয় স্কুলে।
স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা নিয়ে পথচলা
সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময় পাশেই ছিলেন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার আব্দুল আহাদ। হলি আর্টিজানে হামলার সময় তিনি গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ছিলেন।
আহাদ বললেন, “আমার পেছনেই ছিলেন ওসি সালাউদ্দিন। আমাকে বললেন, ‘স্যার আমি কিন্তু পিছনে আছি।’ এরপরেই জঙ্গিদের ছোড়া বোমা বিস্ফোরিত হয়।”
নারকীয় ওই হামলায় ১৭ বিদেশি নিহত হন। তার মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি ও একজন ভারতীয়। জাপানের ওই সাত নাগরিক ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পে কাজ করছিলেন। ওই হামলায় তিন বাংলাদেশিও নিহত হন। আর হামলা ঠেকাতে গিয়ে মারা যান দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ২২ জনকে হত্যার দায়ে নব্য জেএমবির সাত সদস্যের ফাঁসির রায় দেয় আদালত।
বিচারক তার রায়ে বলেন, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মধ্য দিয়ে আসামিরা ‘জঙ্গিবাদের উন্মত্ততা, নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার জঘন্য বহিঃপ্রকাশ’ ঘটিয়েছে। সাজার ক্ষেত্রে তারা কোনো অনুকম্পা বা সহানুভূতি পেতে পারে না।