বৃহস্পতিবার বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নানা বির্তক আর সমালোচনার পথ পেরিয়ে গত শনিবার চালু হওয়া দেশের বৃহত্তম এ সেতুর ব্যয় নিয়ে তোলা প্রশ্নেরও জবাব দেন তিনি।
ব্যয়ের প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, “যেকোনো বিচারে এই ব্যয় অত্যন্ত সাশ্রয়ী। সমসাময়িক সময়ে নির্মিত সব সেতুর সঙ্গে এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ।”
দেশের বৃহত্তম এ যোগাযোগ অবকাঠামোতে থাকা সুযোগ সুবিধা এবং এটি চালুর ফলে মানুষ কী ধরনের উপকার পাবে সেটাও সংসদে তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “পদ্মা সেতু শুধু দক্ষিণ অঞ্চলের যোগাযোগই না, এ সেতু অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ যাতে আরও উন্নতি করতে পারে তার একটা স্বর্ণ দুয়ার উন্মোচন করেছে বলে আমি মনে করি।”
নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি এ সেতুর নির্মাণ দেশ ও জাতির বড় পাওয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শুধু তাই নয়, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে সমগ্র জাতির উপর। সবাই এখন দৃঢ়তার সাথে বলতে পারছে যে আমরাও পারি।
“মানুষের ভেতরে যে একটা শক্তি উৎসারিত হয়েছে, এই শক্তিই আমাদের নিয়ে যাবে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে আমরা যখন উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করব। এই শক্তিই আমাদের পথ দেখাবে। মানুষের শক্তি।”
এদিন সংসদে দেশের বৃহত্তম এ যোগাযোগ অবকাঠামোর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন তিনি; বিরোধী দলের নির্মাণ ব্যয় নিয়ে তোলা প্রশ্নেরও জবাব দেন।
তিনি বলেন, “বিভিন্ন ব্যক্তির পক্ষ থেকে পদ্মা সেতুর নির্মাণ খরচ ১০ হাজার কোটি টাকা বলে যে তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে তা সত্যিকারভাবে কোনো প্রাক্কলন নয় বা বাস্তবসম্মত নয়।”
সংসদে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংকের সরে যাওয়া এবং সরকারের নিজ অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইতিহাস তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
সেসময় বিশ্ব ব্যাংক ছাড়া সেতু নির্মাণ সম্ভব হবে না বলে অনেকের মত দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “কিন্তু আমি এটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে যদি নিজস্ব অর্থায়নে করতে পারি তবেই সেতু করব। কিন্তু কারও কাছে হাত পেতে করব না। বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াবে, নিজে করবে। সেই সিদ্ধান্ত নিয়েই আমরা আমাদের উদ্যোগ নেই।”
সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে আসা নানা বাধা ও তা সফলভাবে মোকাবেলা করার কথাও জানান তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’ উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, “আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, যখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
সমালোচকদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “তারা (সমালোচনাকারীরা) আসলে আমাদের জাতির যে সক্ষমতা অর্থাৎ প্রটেনশিয়ালিটি এটাকে তারা সব সময় অবমূল্যায়ন করে, হেয় প্রতিপন্ন করে। সব সময় যেন এটা অন্যের কাছে হাত পেতে চলা। এই ধরনের একটা মানসিকতায় ভোগে।”
তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু নির্মাণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টা ‘গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ এটা সব সময় আমরা নজর রেখেছি।”