অর্থ আত্মসাৎ: ডেসটিনির ভাইস প্রেসিডেন্টসহ চারজন কারাগারে

গ্রাহকদের চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর সাকিবুজ্জামান খানসহ (অব.) চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2022, 01:09 PM
Updated : 29 June 2022, 01:26 PM

বুধবার ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতে তারা আত্নসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক শেখ নাজমুল আলম শুনানি শেষে নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে যাওয়া অপর তিন আসামি হলেন- ডেসটিনি গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ‘বেস্ট অ্যাভিয়েশন’ এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোল্লা আল আমিন, হেড অব ফাইন্যান্স কাজী মোহাম্মদ ফজলুর করিম ও সুনীল বরণ কর্মকার।

গত ১২ মে এ মামলার রায় ঘোষণা করে আসামিদের ২,৩০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেন ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম।

রায়ে মেজর সাকিবুজ্জামান খানের (অব.) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা, মোল্লা আল আমিনের চার বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা, কাজী মোহাম্মদ ফজলুর করিমের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ জরিমানা এবং সুনীল বরণ কর্মকারের ৮ বছর কারাদণ্ড ও ৫ কোটি টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়।

দুদকের আইনজীবী  মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রায় ঘোষণার সময় তারা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।

এর আগে, গত ১২ জুন ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনের স্ত্রী মিসেস ফারাহ দীবা আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

চার হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা ‘আত্মসাতের’ ঘটনায় মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় গত ১২ মে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের এমডি রফিকুল আমিনসহ ৪৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় আদালত।

২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসিটিনির কর্তাব্যক্তিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রজেক্টের অর্থ আত্মসাতের দুটি মামলা করেন দুদকের উপ পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

এর ফলে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এছাড়া ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রজেক্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেসটিনি গ্রুপের নামে ২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল নামসর্বস্ব।

আসামিরা প্রথমে প্রজেক্টের টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা করতেন, তারপর বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে তা স্থানান্তর করা হত।