সাঁতরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথা বললেন তরুণী?

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর মাদারীপুরের শিবচরে আওয়ামী লীগের জনসভা প্রধানমন্ত্রী শেষ করলেন সবাইকে নিয়ে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে। তারপর সবার মনোযোগ কেড়ে নিলেন এক তরুণী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2022, 03:18 PM
Updated : 25 June 2022, 03:26 PM

কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকার ওই ঘাটে সমাবেশ মঞ্চ সাজানো হয়েছিল পদ্মা সেতুর আদলে। মঞ্চের সামনেই পানি আর নৌকা সাজিয়ে তৈরি করা হয়েছিল নদীর পরিবেশ। 

শনিবার দুপুরে মাওয়া ও জাজিরায় ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা সারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর তিনি শিবচরে আওয়ামী লীগের জনসভাস্থলে পৌঁছান।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ যখন শেষের দিকে, তখনই ঘটল অভাবনীয় ঘটনা। চার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই মঞ্চের সামনের সেই পানিতে নেমে সাঁতরাতে দেখা গেল এক তরুণীকে।

লাল-কালো কামিজ আর কমলা সালোয়ার পরিহিত ওই তরুণী বাধাহীনভাবেই সাঁতরে চলে যান মঞ্চের সামনে। টেলিভিশন ক্যামেরাও ঘুরে যায় তার দিকে।

দূর থেকে দেখা যায়, হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে আর ওড়নাকে আঁচলের মত করে সামনে পেতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন ওই তরুণী। মঞ্চে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের একজন হাত নেড়ে তাকে ফিরে যেত বলছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীও হাত নেড়ে তাকে ফিরে যাওয়ার ইংগিত দেন। মেয়েটির সঙ্গে তাকে কথাও বলতে দেখা যায়।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা শেষ করে ঘুরে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে খুব খুশিতে হাসতে শুরু করেন ওই তরুণী। তারপর তিনি সাঁতরে অন্য পাড়ে গেলে নারী পুলিশের দুই সদস্য তাকে ধরে উঠতে সাহায্য করেন। ভেজা শরীরে তাকে বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছিল এ সময়।

সমাবেশ মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপও ছিলেন।

ওই ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “মেয়েটি বলতেছিল, ‘আমার কিছু নাই, আমারা কিছু নাই, আমারে কিছু একটা করে দেন।’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন, ‘আমি দেখব, তুমি এখন ওখানে যাও। আমি তোমাকে দেখতে বলব। পানি থেকে আগে ওই দিকে যাও’।”

গোলাপ বলেন, “আমি তখন মেয়েটিকে বললাম, তোমাকে দেখবেন, তুমি পুলিশের কাছে যাও। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলার পর মেয়েটি কিনারের দিকে যাওয়া শুরু করে।”

ওই তরুণীর পরিচয় জানতে চাইলে গোলাপ বলেন, “এখনও পরিচয় পাওয়া যায়নি, মেয়েটিকে দেখে মনে হয়েছে, কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। আমরা পরিচয় জানার চেষ্টা করছি।”

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলও ওই তরুণীর পরিচয় জানাতে পারেননি। তিনি বলেছেন, ওই ঘটনার পর মেয়েটি তার বাসায় চলে গেছেন।

এত নিরাপত্তার মধ্যে কীভাবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চের সামনে যেতে পারলেন সে প্রশ্নের উত্তরও মেলেনি পুলিশ সুপারের কাছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী অনেক মানবিক। তার সাথে কথা বলে তিনি আরেকবার মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।”