পদ্মা সেতু বাঙালিকে দুর্নীতিমুক্ত বীরের জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাঙালি বিশ্বের সামনে নিজেদের ‘দুর্নীতিমুক্ত বীরের জাতি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2022, 05:09 PM
Updated : 24 June 2022, 05:09 PM

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে শুক্রবার এক বাণীতে তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। দুর্নীতিমুক্ত বীরের জাতি হিসেবে বাঙালি নিজেদের বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত- ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না’- এই চিরপ্রেরণার বাণীতে উজ্জীবিত হয়ে আমরা প্রমাণ করেছি আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা।”

এ সেতুর অর্থায়ন নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে দীর্ঘ টানাপড়েনের প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে। কানাডার আদালত বিশ্ব ব্যাংকের উত্থাপিত সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে রায় দেয়। সকল দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

“আমরা বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিলে জনগণের কাছ থেকে বিপুল সমর্থন পাই। দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও সমর্থনের ফলেই উন্নয়নের এ নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আগামী দিনেও গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন পূরণে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব।“

‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প’ বাস্তবায়নে নিয়োজিত সর্বস্তরের দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, পরামর্শক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিরাপত্তা তদারকিতে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ও নির্মাণ শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাদের অবদান ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য অভিবাদন জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “সেতুর দুই প্রান্তের জনগণ জমি প্রদানের মাধ্যমে এবং নানাভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এ মাহেন্দ্রক্ষণে দেশবাসীকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। তাছাড়া শিল্পায়ন ও পর্যটন শিল্পে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলেও আশা করছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “টুঙ্গীপাড়াস্থ জাতির পিতার সমাধিসৌধ, সুন্দরবন এবং কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতসহ নানা প্রত্নতাত্ত্বিক ও দর্শনীয় স্থানে পর্যটকের আগমন বাড়বে। নদী বিধৌত উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য সম্পদ আহরণ এবং দেশব্যাপী দ্রুত বাজারজাতকরণে পদ্মা সেতু বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।”

‘পদ্মা সেতু’ যোগাযোগ ব্যবস্থায় সূতিকাগার হিসেবে কাজ করবে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “এই অঞ্চলে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ বেনাপোল, ভোমরা, দর্শনা প্রভৃতি স্থলবন্দরের মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য বাড়বে। এ সেতুর মাধ্যমে দুই প্রান্তে বিদ্যুৎ, গ্যাস, অপটিক্যাল ফাইবারসহ পরিষেবাসমূহের সংযোগ স্থাপিত হবে।”