এছাড়া আরেক আসামির সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
এ মামলায় দণ্ডিত চার আসামির মধ্যে আপিল করেছিলেন তিনজন। দুজনের আপিল মঞ্জুর এবং একজনের আপিল খারিজ করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেয়।
খালাস প্রাপ্তরা হলেন- সোনাদ্দি ওরফে সোনারুদ্দি ও মো. ইসমাইল হোসেন বাবু। আর মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামি হলেন তরিকুল ইসলাম।
এছাড়া পলাতক আসামি মোক্তার আত্মসমর্পণ করলে বা তাকে গ্রেপ্তার করা গেলে পর তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বলা হয়েছে রায়ে।
সোনারুদ্দির আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গ্রেপ্তার তিন আসামি কনডেম সেলে রয়েছেন। রায়ে সোনারুদ্দি এবং ইসমাইলকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আর তরিকুলকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
“খালাস পাওয়া দুইজন অন্য কোনো মামলায় সংযুক্ত না থাকলে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে রায়ে। অপর আসামি তরিকুলকে কনডেম সেল থেকে সাধারণ কয়েদি সেলে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।”
২০০৬ সালের ২০ অক্টোবর রাজশাহীর গৌদাগাড়ীর ধুয়াপাড়া যৌবন গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. বজলুর রহমানের স্ত্রী মিলিয়ারা খাতুন ওরফে রোকসানা ওরফে মিলু (৩০) এবং তার মেয়ে পারভীন ওরফে সাবনুরকে (৯) গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরদিন মিলির বাবা রফিকুল ইসলাম থানায় মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, মিলির মাথা গোয়াল ঘরে এবং সাবনুরের মাথা টয়লেটে পাওয়া যায়।
হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর এ মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ জুলাই রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মেসবাউদ্দৌলা রায়ে চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
তারা হলেন- ধুয়াপাড়া যৌবন লাইন পাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে সোনাদ্দি ওরফে সোনারুদ্দি, সিরাজুল ইসলামের ছেলে ইসমাইল হোসেন বাবু, এসলাম ডাকাতের ছেলে তরিকুল ইসলাম ভুতা এবং মোক্তার। মামলার শুরু থেকেই মোক্তার পলাতক রয়েছেন।
নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাই কোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি তিন আসামি খালাস চেয়ে হাই কোর্টে আপিল করেন।
শুনানি শেষে বিচারপতি শহিদুল ইসলাম ও বিচারপতি আবদুর ববের হাই কোর্ট বেঞ্চ ২০১৪ সালের ১৩ মার্চ আসামিদের আপিল খারিজ করে চারজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
এরপর কারাবন্দি তিন আসামি খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে ফের আপিল করেন। তবে পলাতক থাকায় মোক্তার আপিল করেননি। ওই আপিলগুলোর শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দিল আপিল বিভাগ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামি ইসমাইলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান, সোনারুদ্দির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা এবং তরিকুলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম বকস কল্লোল।