পদ্মা সেতুর উদ্বোধন: আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন ইউনূস

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহম্মদ ইউনূস, তবে তিনি যাবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় ইউনূস সেন্টার। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2022, 10:11 AM
Updated : 24 June 2022, 06:50 AM

বিএনপির সাত নেতাকে ইতোমধ্যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হলেও দলটির চেয়ারপারসন, দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে আলাদা করে দাওয়াত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন সেতু বিভাগের পরিচালক (প্রশাসন) রুপম আনোয়ার।

বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “খালেদা জিয়াকে আলাদা করে কোনো আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়নি। ড. ইউনুসকে যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে সেটি বুধবারই রিসিভ করা হয়েছে। আমরা সরাসরি উনার অফিসে পাঠিয়েছি।"

শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য সাড়ে ৩ হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হচ্ছে বলে জানান রুপম আনোয়ার।

তিনি বলেন, “এর মধ্যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিদেশি কূটনৈতিক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ অনেকে আছেন। পদ্মা সেতু তৈরিতে যারা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন, যেসব বিদেশি কর্মী এই সেতু তৈরিতে পরিশ্রম করেছেন, তারাও আমন্ত্রিত হিসেবে থাকবেন।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের প্রশ্নের উত্তরে ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র লামিয়া মোর্শেদ জানান, নোবেলজয়ী মুহম্মদ ইউনূসের নামে সেতু বিভাগের পাঠানো আমন্ত্রণপত্র তারা পেয়েছেন।

“এটা কালকে রিসিভড হয়েছে। স্যারের কাছে পৌঁছানো হয়েছে।”

ইউনূস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাবেন কি না জানতে চাইলে লামিয়া বলেন, "উনি দেশেই আছেন, যাবেন কি না, সেটা আমাদেরকে এখনও বলেননি। তবে আমন্ত্রণ তিনি রিসিভ করেছেন।”

পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে বিশ্ব ব্যাংক চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে পিছু হটেছিল। এ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের পর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণের পথে এগিয়ে যায়। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার নির্মিত সেই সেতুর উদ্বোধন হচ্ছে শনিবার।

বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ তুলেছিল, তারা তা প্রমাণ করতে পারেনি। এ নিয়ে কানাডার আদালতে মামলাও হয়েছিল, কিন্তু তা টেকেনি। 

সরকার বারাবরই বলে আসছে, বিশ্ব ব্যাংকের সরে যাওয়ার পেছনে ইউনূসের ‘হাত আছে’। তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে রেখে দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকেও চাপ দেওয়া হয়েছিল। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও বলেছেন, “এত চাপ! এই মামলা, যে সমস্ত খেলা। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি। এই যে অপমান! স্টেট ডিপার্টমেন্ট দুই দুই বার আমার ছেলেকে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ডেকে নিয়ে থ্রেট করেছে যে তোমার মাকে বলো-এমডির পদ থেকে ইউনূসকে সরানো যাবে না।

“গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি ড. ইউনূস বেআইনিভাবে ৭১ বছর পর্যন্ত এমডি পদে ছিল। তাকে কোনো অপমান করা হয়নি বরং তাকে ব্যাংকের উপদেষ্টা ইমেরেটাস হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকে এমডি থাকতে হবে!

“এই যে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করা। আমরা ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দোষ দিচ্ছি না। কিন্তু এই ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দিয়ে তো এটা করানো হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট তার শেষ কর্মদিবসে এটার (পদ্মা) টাকা বন্ধ করে দিয়ে যায়।”

বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন স্থগিতের পর খালেদা জিয়া এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, “স্বাধীনতার পর এই প্রথম বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করেছে। প্রকল্পের ভাগ্য এখন অনিশ্চিত।”

বিএনপি থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল বিশ্ব ব্যাংকের সেই অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছিল। কিন্তু পরে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে জানায়, অভিযোগের কোনো সারবত্তাই তারা পায়নি।

আরও পড়ুন-