নৌপথেই স্বস্তি খুঁজবে যাত্রীরা, আশা লঞ্চ মালিকদের

পদ্মা সেতুর কারণে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ জনপদে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের সুযোগ হলেও স্বল্প খরচ, নিরাপত্তা ও  আরামদায়ক ভ্রমণ সুবিধার জন্য সদরঘাটে যাত্রী পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না লঞ্চ মালিকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদককামাল হোসেন তালুকদার, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2022, 06:39 PM
Updated : 23 June 2022, 11:52 AM

তারা বলছেন, সেতু চালু হওয়ার পর শিমুলিয়া (মাওয়া) থেকে বাংলাবাজার ও মাঝিরকান্দি রুটে সরাসরি প্রভাব পড়লেও সার্বিকভাবে দেশের লঞ্চ ব্যবসায় তেমন প্রভাব পড়বে না। জরুরি প্রয়োজনে অনেকেই হয়তো সড়কপথে গন্তব্যে যাবেন, কিন্তু স্বস্তির যাত্রা খুঁজবেন নৌপথেই। সেই আত্মবিশ্বাস থেকে এখনও নতুন নতুন লঞ্চ নির্মাণের কাজ চলছে।

আর সদরঘাটের যাত্রীরা বলছেন, শুরুতে পদ্মা সেতুর দেখার জন্য তারা দু-একবার সড়কপথে বাড়ি যাতায়াত করতে চান। তবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য লঞ্চকেই বেছে নেবেন। 

বর্তমানে সারাদেশে মোট ১০৭টি নৌপথ রয়েছে, যার মধ্যে ৪৩টি পথ ঢাকার সদরঘাট থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের সংযোগকারী। এই ৪৩টি নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চের সংখ্যা প্রায় দুইশ। আর শিমুলিয়া থেকে মাঝিরকান্দি ও বাংলাবাজারে চলাচল করে ৮৭টি লঞ্চ।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এসব লঞ্চের ভাগ্য কী ঘটবে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যোগাযোগ করা হয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে। তার কথায়, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সবাইকে (লঞ্চ মালিক, বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি) আবেগের সঙ্গে লড়াই করতে হবে।

“শিমুলিয়া থেকে মাঝিরকান্দি, বাংলাবাজার রুটে সেতু উদ্বোধনের পরও ফেরি থাকবে। দুই মাস পর্যবেক্ষণ করব, এখন তো সবাই উপর দিয়ে যেতে চাইবে। আর এই রুটে চলা ৮৭ লঞ্চের ভাগ্যে কী হবে, তা বলা সময় সাপেক্ষ।”

শিমুলিয়া নৌপথে চলাচলকারী 'তন্নী তামিম' লঞ্চের মালিক তরিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিমুলিয়া থেকে মাঝিরকান্দি ও বাংলাবাজার নৌপথে লঞ্চগুলো রাখা সম্ভব হবে না।

“২৩ জেলার লোকজন এ নৌপথে পারাপার হতো। পদ্মা সেতুর চালুর পর আর কেউ সামান্য টাকা বাঁচানোর জন্য বোঝা টেনে লঞ্চে উঠবে না। পারাপারে লঞ্চ ভাড়া ৪৫ টাকা আর ঢাকা থেকে সড়ক পথে যে ভাড়া হবে তা তত বেশি না।“

এ রুটে ব্যবসা না হলেও মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ যে দূর হবে, তাতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন দুই দশকের এ নৌযান ব্যবসায়ী।

শিমুলিয়া নৌপথে চলাচলকারী ‘ইয়া মুক্তাদির’ লঞ্চের মালিক রুবেল বলেন, “প্রতিমাসে স্টাফ ও তেলসহ মোট এক লাখ টাকা খরচ হয়। সেতু চালুর পর এই রুটে এত লঞ্চ কোনভাবেই টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

“এই রুটে বড়জোর ৫ থেকে ৬টি লঞ্চ টিকতে পারে।”

বাকি লঞ্চগুলোর কী হবে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র একজন কর্মকর্তা বলেন, “নতুন আরও নৌপথ হচ্ছে এবং হবে। ওইসব লঞ্চ সেসব নৌরুটে শিফ্টিং হবে।

“বালাসী-বাহাদুরাবাদ নতুন করে চালু হয়েছে, আরও নতুন রুট হবে।”

বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি ও বাংলাবাজার ৯টি ফেরি যাতায়াত করে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হওয়ার পরও ফেরিগুলো থাকবে। দুই মাস পর্যবেক্ষণ করে এসব ফেরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

‘সদরঘাটে তেমন প্রভাব পড়বে না’

পদ্মা সেতু চালু হলেও সদরঘাট থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, ভোলা, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও চাঁদপুরে চলাচলকারী লঞ্চে যাত্রী পেতে বেগ পেতে হবে বলে মনে করছেন না লঞ্চ ব্যবসায়ীরা। তবে শুরুতে কিছুটা প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করছেন তারা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট বদিউজ্জামান বাদল মনে করেন, পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক পথে নির্বিঘ্নে চলাচলের সুযোগ হওয়ায় ২০ শতাংশের মতো লঞ্চ যাত্রী কমতে পারে। তবে তাতে এ খাতের ব্যবসায় তেমন প্রভাব ফেলবে না।

কথায় কথায় আগামীর লঞ্চ ব্যবসায় নিজের আত্মবিশ্বাস তুলে ধরলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার পরিচালক মামুন-অর-রশিদ। মেঘনা-দাউদকান্দি সেতু চালুর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “সেসময় সবাই বলাবলি করছিল চাঁদপুরের মানুষ আর লঞ্চে চড়বে না। কিন্তু এখনও আধা ঘণ্টা পরপর এ রুটে লঞ্চ ছাড়ে।”

নৌপথের ব্যয় সস্তা, আরামদায়ক ও নিরাপদ হওয়ায় যাত্রীরা তাতেই ভরসা করবে বলে মনে করেন তিনি।

বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন শাখার তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা থেকে বরিশাল বা বরিশাল থেকে ঢাকা রুটে লোকাল চারটিসহ মোট ২৪টি লঞ্চ যাতায়াত করে। এর মধ্যে তিনটি চলাচল করে দিনের বেলায়।

এই রুটে বর্তমানে সুন্দরবন গ্রুপের ছয়টি লঞ্চ চলাচল করে। গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম ঝন্টু বললেন, “আরও নতুন দুটি লঞ্চ আসছে।”

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর যাত্রী পেতে সমস্যা হবে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যদি সমস্যাই হতো, তাহলে সুন্দরবন-১৫ ও সুন্দরবন-১৬ দুটি লঞ্চ নামানোর উদ্যোগ নিতাম না।

“লঞ্চ আর বাসের যাত্রী ভিন্ন। যারা লঞ্চে যেতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন, তারা বাসে যাতায়াত করবে না।”

নির্মাণ হচ্ছে নতুন লঞ্চ

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সদরঘাট থেকে যাত্রী সংখ্যা কমার বা বাড়া নিয়ে লঞ্চ মালিকদের কোনো ভাবনা নেই বলে তিনি জানান।

এতো আত্মবিশ্বাসের কারণ কী, তার উত্তরে তিনি বলেন, “লঞ্চের মতো এত আদামদায়ক ও সস্তা ভ্রমণ অন্য যানবাহনে পাওয়া যাবে না।”

ভাড়া বিশ্নেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “ঢাকা-বরিশাল রুটে বাসের একজন যাত্রীর ভাড়া ৪১২ টাকা, আর ঢাকা-বরিশাল লঞ্চের ডেকের সরকারি ভাড়া ৩৫২ টাকা।

“কিন্তু কথা হচ্ছে স্বামী-স্ত্রী দুইজন তাদের সাত ও আট বছরের দুই সন্তান বিনা টিকেটে লঞ্চে করে নিতে পারবেন, কিন্তু বাসে কি সম্ভব? আর লঞ্চ মালিকরা প্রতিযোগিতা করে ঢাকা থেকে বরিশাল ২০০ টাকাতেও ডেকে যাত্রী নেয়। এত কম টাকায়…।”

কিন্তু ঝন্টুর মতো কি সবাই আত্মবিশ্বাসী? তা বুঝতে কথা বলা হয় আরও কয়েকজনের সঙ্গে।

যুবরাজ নামে এক লঞ্চ মালিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলে সদরঘাট থেকে যাত্রী কমে যাবে- এই ভাবনা বিন্দু পরিমাণও মনে নেই।

“লঞ্চে লাখের উপর যাত্রী যেতে পারে আর এক লাখ যাত্রী পরিবহন করতে কতগুলো বাস লাগবে?” পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন যুবরাজ।

তবে সেতু চালুর হওয়ার পর পাঁচ-ছয়মাস যাত্রী সংখ্যায় প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তিনি। তার ভাষ্য, “আমিও তো উদ্বোধনের পর পরিবার নিয়ে পদ্মা সেতুর উপর থেকে ভাঙা যাব শুধু পদ্মা সেতু দেখার জন্য। আর যাদের বাড়ি বরিশাল, মাদারীপুর বা ঝালকাঠি, তারা তো প্রথম প্রথম লঞ্চে না গিয়ে বাসেই যেতে চাইবে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রতিদিন বিশেষ করে ঈদের সময় সোয়া লাখ যাত্রী লঞ্চগুলো প্রতিদিন বহন করে, সুতরাং ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই বাসে যেতে পারবে না। তাদের লঞ্চেই যাতায়াত করতে হবে।

“এছাড়া ভাঙার পর রাস্তা সিঙ্গেল লাইন, সুতরাং হাইওয়ে থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ভাঙা পর্যন্ত গিয়ে সিঙ্গেল লাইনে ঢুকলে প্রচণ্ড যানজটে পড়তে হবে। এ কারণেই যাত্রীরা পদ্মা সেতু দেখার যাত্রা শেষ হলে আবার লঞ্চেই যাতায়াত করবে।“

ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান

কোন পথে কেমন প্রভাব পড়বে?

নৌযান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলে রাজধানীর সঙ্গে বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে চলাচলকারী ১৩০টি লঞ্চে যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কমতে পারে।

ঢাকা থেকে মুলাদী রুটে (বরিশাল) ১৬টি, ভাসানচরে (বরিশাল) ৪টি, টরকীতে (বরিশাল) ৪টি ও পয়সারহাটে (বরিশালের উজিরপুর) ২টি লঞ্চ চলাচল করে। আর সদরঘাট থেকে পাতাবুনিয়া (পটুয়াখালী) রুটে ২টি, ঝালকাঠিতে ২টি, রায়েন্দায় (পিরোজপুর) ৩টি, ভান্ডারিয়ায় (পিরোজপুর) ৯টি, বরগুনায় ৪টি, আমতলীতে (পটুয়াখালী) ৪টি, পটুয়াখালীতে ১১টি, গলাচিপায় (পটুয়াখালী) ৫টি, কালাইয়ায় (পটুয়াখালী) ৪টি, খেপুপাড়া পায়রা বন্দর রুটে (পটুয়াখালী) ৮টি, নড়িয়ায় (শরীয়তপুর) ১১টি, দুলারচরে (শরীয়তপুর) ২টি, স্বর্ণদ্বীপে ৪পি, ডামুড্যায় (শরীয়তপুর) ৬টি, হাটুরিয়ায় (শরীয়তপুর) ২টি, উড়ারচরে (মাদারীপুর) ৩টি ও মাদারীপুর ২টি লঞ্চ চলাচল করে।

ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চের ব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, “বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি রুটে কিছু যাত্রী কমবে। তবে কয়েকমাস পর যাত্রী আবার লঞ্চেই ফিরে আসবে। কারণ লঞ্চ অনেক আরামদায়ক।”

তবে দক্ষিণের বাকি নৌপথে তেমন প্রভাব পড়বে না; যার মধ্যে আছে ঢাকার-ভোলা রুটে ৬টি লঞ্চ, পাতারহাটে (ভোলা) ৫টি, ঘোষের হাট/লেতরা বাজারে (ভোলা) ৬টি, দেওয়ান বাড়িতে (ভোলা) ২টি, ইলিশায় (ভোলা) ৯টি , লালমোহনে (ভোলা) ৩টি, বোরহানউদ্দিনে (ভোলা) ৪টি, বেতুয়া ও চরফ্যাশনে (ভোলা) ৬টি, হাকিমুদ্দিনে ৩টি ও নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৪টি লঞ্চ।

এমভি টিপু গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মো. ফারুক হোসেন জানান, তাদের লঞ্চ ভোলা, বরগুনা ও হাতিয়া রুটে চলাচল করে। কিছু লঞ্চ বরিশাল রুটেও চলাচল করে।

“ধারণা করা হচ্ছে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর বরিশাল রুটের যাত্রী কিছুটা কমবে। তবে ভোলা, হাতিয়া, বরগুনা রুটে যাত্রী তেমন কমার সম্ভবনা নেই।”

এছাড়া ঢাকা-চাঁদপুর রুটে ১৬টি এবং চাঁদপুর-ঈদগাহ ফেরিঘাট (শরীয়তপুর) রুটে ৭টি লঞ্চ প্রতিদিন যাওয়া আসা করে। এ দুই রুটেও পদ্মা সেতুর কোনো প্রভাব পড়বে না বলেই ধারণা লঞ্চ মালিকদের।

ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান

‘হেইয়া কি এখন কইতে পারি?’

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নৌপথ নিয়ে যাত্রীদের ভাবনা কী? তার উত্তর খুঁজতে গত সপ্তাহে সদরঘাটে যাত্রীদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। সুন্দরবন লঞ্চের ডেকে মধ্যবয়সী এক যাত্রী চাদর দিয়ে বিছানা পেতে বসে আছেন। যাবেন বরিশাল।

পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে লঞ্চে যাতায়াত করবেন কি না, এ প্রশ্ন শুনে কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন। তারপর বলে উঠলেন, “হেইয়া কি এখন কইতে পারি? পরে কইতে পারমু। তবে বাসে তো সময় কম লাগবে। টাকাও অত বেশি না।“ আর কিছু বললেন না তিনি।

ডেকেই আরেক যাত্রী পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে শুয়ে আছেন। নাম আব্দুল করিম। একই প্রশ্ন তাকে করা হলে এক গাল হেসে বললেন, “পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে তো একবার হলেও যামু। তবে লঞ্চের মত আরাম পামু না।

“এই যে দেখেন পুরো পায়ে ব্যান্ডেজ। রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া তো যাওয়া যেত না, কিন্তু ডেকে কত আরামে- আবার শুয়ে শুয়ে যেতে পারছি।”

করিমের পর কয়েকটি লঞ্চে বরিশাল, ঝলকাঠি, পটুয়াখালীগামী অর্ধশত যাত্রীর সঙ্গে কথা হয়। মোটামুটি সবারই একইরকম কথা- ‘পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে পরিবার নিয়ে যাব, তবে পরে লঞ্চেই যাতায়াত করব।’