বুধবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে আসেন সিইসি। তার সঙ্গে ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার।
আগামী সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভার নিয়ে চার মাস আগে দায়িত্ব নেওয়া এই ইসি কুমিল্লা দিয়েই তাদের নির্বাচনী যাত্রা শুরু করল।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ১০৫টি কেন্দ্রের সবক’টিতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট গ্রহণ হয়। যন্ত্রে ভোটগ্রহণে দেরির অভিযোগও উঠেছে।
গোলযোগহীন ভোট হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে আসা সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের দেখাচ্ছিল নির্ভার।
ইভিএমে ভোটগ্রহণে দেরির অভিযোগ নিয়ে সিইসি বলেন, “প্রবল বৃষ্টির সময় একটু বিঘ্ন ঘটেছিল, অনেককে আশ্রয় নিতে হয়েছিল (শেডে), ভোট কিছুটা শ্লথ গতি হয়েছিল।”
তিনি বলেন, দু-একজন ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে অসুবিধা হয়েছে। যেমন হাতে মেহেদী পরা ছিল, পরে হাত পরিষ্কার করে যখন এসেছে, তখন ছাপ ম্যাচ করেছে। এ জন্য ভোটগ্রহণে দেরি হয়।
“আমরা লক্ষ্য করেছি, যারা বয়োবৃদ্ধ তাদের কারও কারও ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে ইভিএমে অসুবিধা হয়েছে। সাধারণভাবে আমাদের যেটা এপ্রাইজাল, ইভিএমে ভোটটা ভালো হয়েছে।”
কুমিল্লার পাশাপাশি কয়েকটি পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদেও একই দিনে ভোটগ্রহণ হয়। এবারই প্রথম ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল, যার মাধ্যমে নির্বাচন ভবন থেকেও ভোট কেন্দ্রে নজরদারি করা যাচ্ছিল।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, “সকাল থেকেই আমি ও মাননীয় কমিশনাররা, কর্মকর্তারা যতদূর সম্ভব সিসি ক্যামেরা, গণসংবাদগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি। প্রথমবারের মতো সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। এটা আমাদের নতুনত্ব, ভোটিং ব্যবস্থাতে সংযোজন হয়েছে।”
সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ভোটের আয়োজনে নিজেদের আন্তরিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “স্বচ্ছতার বিষয়ে আমরা আগে থেকে শক্ত ছিলাম। যাতে ভোট স্বচ্ছ হয়। সেজন্য সংবাদকর্মীদের অবাধ পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সেটাও একটা ইতিবাচক ফল। স্বচ্ছ করার ক্ষেত্রে, গ্রহণযোগ্য করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। অবজারভাররাও দায়িত্ব পালন করেছে।”
কোনো কেন্দ্রের ভোট কক্ষে অবাঞ্ছিত ব্যক্তি কাউকেও দেখা যায়নি দাবি করে সিইসি বলেন, “(সিসি ক্যামেরা মনিটরিংয়ের সময় এ ধরনের) আমরা পাইনি। ভোটকেন্দ্রে কোনো ডাকাত গেছে, এমন তথ্য পাইনি।”
ভোট পর্যবেক্ষকসহ কারও কাছে থেকে ‘বিরূপ মন্তব্য’ও না পাওয়ার কথা বলেন হাবিবুল আউয়াল।
কুমিল্লায় ৬০ শতাংশের মতো ভোটগ্রহণ হয়েছে ধারণা দিয়ে তিনি বলেন, “সার্বিকভাবে সিটি, পৌরসভা ও ইউপির ভোট শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে হয়েছে। ভোটাররাও তেমন কোনো অভিযোগ করতে একেবারেই আসেনি।”
তবে সার্বিক মূল্যায়নের ভার সবার প্রতি ছেড়ে দিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, “আমরা শুধু দায়িত্ব পালন করেছি। ফার্স্ট ক্লাস, সেকেন্ড ক্লাস, ফেইল- কী করেছি, এটা আপনারাই বিশ্লেষণ করবেন।
“আমি খুব উৎফুল্ল নই, বেদনার্থ ও ক্লান্ত-তাও নই। মনে করেছি এটা আমাদের দায়িত্ব। দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। কতটা সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছি, তার মূল্যায়ন আমরা করতে পারব না।”