টিপু হত্যা: মুসার ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

মতিঝিলের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যা মামলায় ওমানে গ্রেপ্তার সুমন শিকদার মুসাকে ১০ দিনের রিমান্ডে চাইবে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2022, 04:15 PM
Updated : 9 June 2022, 04:15 PM

চট্টগ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর এ কথা জানান গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার রিফাত রহমান শামীম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “শুক্রবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে। এরপর অন্তত ১০ দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে।”

টিপু ও প্রীতি হত্যায় অন্যতম সন্দেহভাজন মুসা ওমানে গ্রেপ্তার হলে কূটনৈতিক সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার তাকে দেশে আনা হয়। তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সকালে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় এলেও খারাপ আবহাওয়ায় নামতে না পেরে আবার চট্টগ্রামে ফিরে যায়।

পরে বিকালে তাকে ঢাকায় আনা হয় জানিয়ে ডিবির উপ-পুলিশ কমিশনার রিফাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিকাল হয়ে যাওয়ায় তাকে আর আদালতে পাঠানো সম্ভব হয়নি।”

গত ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাজাহানপুরে যানজটে আটকে পড়া গাড়িতে এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু।

মোটর সাইকেলে আসা এক ব্যক্তি টিপুর গাড়ির কাছে এসে গুলি করেন।ওই সময় টিপুর গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি গুলিতে নিহত হন। টিপুর গাড়িচালক মুন্নাও গুলিবিদ্ধ হন।

এ ঘটনার পর দুবাই থেকে ওমানে চলে যান মুসা। এ মামলার তদন্তে মুসার নাম আসার পর তাকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছিল বাংলাদেশের পুলিশ। এরপর গত ১২ মে ওমানে গ্রেপ্তার হলেও বাংলাদেশে বিষয়টি জানাজানি হয় ৩ জুন।

হত্যাকাণ্ডের পর টিপুর স্ত্রী স্থানীয় নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি যে মামলা করেছেন, তাতে আসামির তালিকায় কারও নাম উল্লেখ করা ছিল না।

পরে ২৬ মার্চ রাতে বগুড়া থেকে মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ব্যক্তিই টিপুকে গুলি করেন। পরে আরফান উল্লাহ দামাল নামে আরও একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয় কমলাপুর থেকে।

এরপর ২ এপ্রিল মুসার ভাই সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, মতিঝিল থানার ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় র‌্যাব।

র‌্যাব সে সময় বলেছিল, চাঁদাবাজি ও দরপত্র নিয়ে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব, রিয়াজুল হক মিল্কী হত্যার বদলা এবং বোঁচা বাবু হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ওমর ফারুকসহ স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। বাজেট ছিল ১৫ লাখ টাকা।

তদন্তকারীদের ভাষ্য, মুসা ‘রাজনীতি ও অপরাধজগতের মধ্যে যোগসূত্র’ হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ঢাকা ও দুবাইয়ের অপরাধজগতের মধ্যেও সংযোগের সমন্বয় করতেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের ১২ দিন আগেই মুসা দুবাই চলে যান। হত্যা পরিকল্পনা এবং যাবতীয় নির্দেশনা সেখান থেকেই দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পর দুবাইতে বার্তা যায় ‘কাজ শেষ’।

এরপর মুসা দুবাই থেকে ওমানে গেছেন বলে গত মাসেই সংবাদপত্রে খবর আসে। পুলিশ সদরপ্তরও মুসার দুবাই থেকে ওমান যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে।

এদিকে বাংলাদেশের পুলিশও মুসাকে ধরার জন্য ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। সেই প্রক্রিয়াতেই সাফল্য এসেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য।

আরও খবর