ইউপি নির্বাচন: কাফন ও বিষের বোতল নিয়ে ইসি ভবনে নোয়াখালীর ৩৩ প্রার্থী

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার দুই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৩৩ জন প্রার্থী বিষের বোতল আর কাফনের কাপড় নিয়ে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2022, 09:34 AM
Updated : 31 May 2022, 09:34 AM

তাদের অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্যের স্বামীর ‘জুলুমের’ কারণে ভোটের মাঠে তারা প্রচার চালাতে পারছেন না। তবে নোয়াখালী-৬ আসনের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আগামী ১৫ জুন হাতিয়ার নবগঠিত ১ নম্বর হরণী ও ২ নম্বর চানন্দি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচন ঘিরে সেখানে প্রার্থীদের উপর হামলা, প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে প্রার্থীরা অভিযোগ করছেন।

এর প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী, সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদের ২৫ প্রার্থী এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদের ছয় প্রার্থী ইসিতে হাজির হয়ে কর্মসূচিতে যোগ দেন।

ঘণ্টা দুয়েক পর প্রার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে আশ্বাস পেয়ে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে কথা জানান চানন্দির ইউপি সদস্য পদের প্রার্থী কামরুল হাসান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস পেয়ে প্রার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি শেষ করেছেন।”

নির্বাচন ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া প্রার্থীরা বলেন, সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী মোহাম্মদ আলীর কারণে তারা ‘বিপদে’ আছেন।

হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মুসফিকুর রহমান বলেন, “এমপির স্বামী তার সন্ত্রাসীদের দিয়ে প্রার্থীদের উপর হামলা করছে, প্রচার কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে।”

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নিজেও হামলার শিকার হয়েছেন দাবি করে মুসফিকুর বলেন, “আমরা তখন অনেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারিনি। সিইসি ও সচিবকে জানানোর পর তিনি আমাদেরকে পাশের উপজেলা সুবর্ণচরে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।”

এই প্রার্থীর অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর প্রচারে নামলেই ‘হামলা করা হচ্ছে’। ভোট কেন্দ্রে ম্যাজিষ্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগের দাবি জানান তিনি।

সদস্য পদের প্রার্থী কামরুল হাসান ওই এলাকায় ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সার্কেল এসিকে প্রত্যাহারেরও দাবি জানান। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি আদায় না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

অভিযোগের বিষয়ে সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী মোহাম্মদ আলীর বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।

তবে নোয়াখালী-৬ আসনের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন।  

তিনি বলেন, “এসব বানোয়াট মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ। সবাই তো প্রচার করছে, কারো অভিযোগ থাকলে স্থানীয় প্রশাসন দেখবে। কেউ বাধা দিচ্ছে বলে আমাদের জানা নেই।”

প্রার্থীদের অভিযোগ পাওয়ার পর ইসি কী ব্যবস্থা নেবে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, “পেশী শক্তি দেখিয়ে কেউ ভোটে জেতার স্বপ্ন দেখলে তা ভুল হবে। এ বিষয়ে স্মারকলিপি পেলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”