যুদ্ধাপরাধ: খুলনার ৬ আসামির রায় যে কোনো দিন

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে খুলনার আমজাদ হোসেন হাওলাদারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলার রায় যে কোনো দিন ঘোষণার জন্য রেখেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2022, 05:18 PM
Updated : 22 May 2022, 05:18 PM
রোববার এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক গ্রহণ শেষে ট্রাইবুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

আসামিরা হলেন- খুলনার বটিয়াঘাটায়র আমজাদ হোসেন হাওলাদার, সহর আলী শেখ, মো. আতিয়ার রহমান শেখ, মো. মোতাসিন বিল্লাহ, মো. কামাল উদ্দিন গোলদার ও মো. নজরুল ইসলাম। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম পলাতক। বাকি আসামিরা কারাগারে রয়েছেন।

প্রসিকিউটর মুন্নি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ মামলার মোট আসামি ছিল সাতজন, এদের মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছিল।

“মামলার অভিযোগ গঠনের আগে কাস্টডিতে থাকা অবস্থায় আসামি মোজাহার আলী শেখ মারা যান। পরে বাকি ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত।”

অন্য আসামি নজরুল মামলার শুরু থেকেই পলাতক বলে জানান তিনি।

আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগের চারটি অভিযোগ রয়েছে।

২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। এরপর ২০১৭ সালের ৮ অগাস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

পরের বছর এ মামলার অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ গত ৭ নভেম্বর তা শেষ হয়।

পরে এ মামলায় সাক্ষীদের জেরা শেষে রোববার যুক্ততর্ক শেষ হলে যে কোনো দিন রায়ের জন্য রাখে ট্রাইব্যুনাল।

চার অভিযোগ

প্রথম অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১০ আগস্ট আমজাদ হোসেন হাওলাদারসহ চার-পাঁচজন রাজাকার বটিয়াঘাটার মাছালিয়া গ্রামের শান্তি লতা মণ্ডলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বিনোদ মণ্ডলকে অবৈধভাবে আটক-নির্যাতন, অপহরণ ও গুলি করে হত্যা করেন।

দ্বিতীয় অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৫ অক্টোবর বটিয়াঘাটার পূর্বহালিয়া গ্রামের চাপরাশী বাড়িতে হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র হরিদাস মজুমদারকে আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করেন আসামিরা।

তৃতীয় অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ২১ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করতে বটিয়াঘাটার সুখদাড়া গ্রামে হামলা চালিয়ে নিরীহ নিরস্ত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের চারজনকে হত্যা, চার-ছয়টি বাড়ির মালামাল লুট এবং অগ্নিসংযোগ করে আসামিরা।

চতুর্থ অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বরে আসামিরা বটিয়াঘাটার বারোআড়িয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধা জ্যোতিষ মণ্ডল এবং আব্দুল আজিজকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।