ক্রেডিট কার্ড থেকে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ২

গ্রাহকের ক্রেডিট কার্ডের পিন কোড পরিবর্তনের কথা বলে ওটিপি জেনে নিয়ে মোবাইল ব্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2022, 04:43 PM
Updated : 19 May 2022, 04:43 PM

গ্রেপ্তাররা হলেন- কাবুল হাসান রশিদ এবং মোহাম্মদ হাসান খান।

এদের মধ্যে কাবুল একটি ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট রিলেশনশিপ অফিসার হিসেবে কার্ড ডিভিশনের অপারেশন ইউনিটে কর্মরত ছিলেন বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।

গত ২৭ এপ্রিল রাজধানীর কদমতলী এবং ১৮ মে ডেমরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা দুটি মামলার সূত্র ধরে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এই চক্রের আরেক সদস্য রাব্বী পলাতক রয়েছেন।

তিনি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ, নগদ এবং রকেটের মাধ্যমে প্রতারণার পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতে হ্যাকার হিসেবে তৎপর বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

হাফিজ আক্তার বলেন, “গ্রেপ্তার কাবুল গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ডের (নাম, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, ক্রেডিট কার্ড নম্বর, মেয়াদ) তথ্য নিয়ে প্রতিটি শিট সাত থেকে আট হাজার টাকায় ক্রেডিট কার্ড হ্যাকার হাসানকে সরবরাহ করতেন।

“হাসান সেসব শিট পলাতক আসামি রাব্বীর কাছে হস্তান্তর করতেন। রাব্বী পরবর্তীতে ব্যাংকের কর্মকর্তা সেজে হট লাইন নম্বর +১৬৪৯১ ক্লোন করে গ্রাহকদের ফোন করতেন।

“তাদের কাছে ব্যাংকে জমা দেওয়া ক্রেডিট কার্ডের তথ্য (নাম, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, ক্রেডিট কার্ড নম্বর, ভ্যালিডিটি তারিখ) জানিয়ে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের বিশ্বস্ততা অর্জন করতেন।”

পরবর্তীতে গ্রেপ্তার হাসানকে ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতেন রাব্বী।

তিনি বলেন, “হাসান পিনকোড চার ডিজিট থেকে ছয় ডিজিট করতে হবে বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে কৌশলে ওটিপি হাতিয়ে নিয়ে ক্রেডিট কার্ড থেকে বিকাশ, নগদ, রকেট অপশনের মাধ্যমে কার্ডে জমা থাকা টাকা হাতিয়ে নিতেন।

“পরবর্তীতে হাসান সেই টাকা রাব্বীর বিকাশ, নগদ অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিতেন। রাব্বী ৩০ শতাংশ টাকা রেখে বাকি টাকা হাসানকে দিয়ে দিতেন।”

ব্যাংক গ্রাহকদের উদ্দেশে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, “গ্রাহকদের উচিত কোনোভাবেই কারো কাছে ওটিপি শেয়ার না করা, ব্যাংক কখনও ওটিপি চায় না। যেকোনো অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রেও নিরাপদ পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করতে হবে।”

কোনো গ্রাহক ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির শিকার হলে দ্রুত গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগে জানানোর জন্য আহবান জানান গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা।