পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ ‘৫/৬ দিনের মধ্যে’ জানাবেন প্রধানমন্ত্রী

বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শেষে উদ্বোধনের জন্য এখন প্রায় প্রস্তুত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2022, 11:01 AM
Updated : 19 May 2022, 11:01 AM

কবে এই সেতু উদ্বোধন হবে- তা নিয়ে নানা জল্পনার মধ্যে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর জানানো হয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যেই উদ্বোধনের তারিখ ঠিক করে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এলে তার কাছে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন জানতে চান সাংবাদিকরা।

জবাবে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুর বিষয়ে আজকে যে আলোচনা হয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই পরিষ্কার করবেন আগামী পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যে। পদ্মা সেতু জুন মাসের শেষে উদ্বোধন হচ্ছে, এটা তিনি বলেই দিয়েছেন। আমরাও রেডি আছি।”

“আশা করি শেষ সপ্তাহের আগেই ব্রিজ রেডি হয়ে যাবে,” বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন, পদ্মা সেতুর কাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। জুন মাসের শেষ ভাগে তা উদ্বোধন হবে।

পদ্মা সেতুর নাম কী হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পদ্মা সেতুই হবে। প্রধানমন্ত্রী হয়ত আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে যে কোনো সময় ক্লিয়ার করবেন।”

দক্ষিণ জনপদের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের এই সেতুর নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ করার দাবি ইতোমধ্যে তুলেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। নানা অঙ্গন থেকে তাতে সমর্থনও দেওয়া হচ্ছে।

পদ্মা নদীর বুকে নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার কোটি টাকায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর কাজ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা।

সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা হয়েছে বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল।

পদ্মা সেতুর নির্ধারিত টোল বেশি হওয়া নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে, সে বিষয়ে তিনি বলেন, “টোলটা হল, যখনই যেখানে ব্রিজ করি এর স্ট্যান্ডার্ড হল ফেরির দেড় গুণ। সেটা ধরেই করা হয়েছে।

“বঙ্গবন্ধু ব্রিজ হল প্রায় ৫ কিলোমিটার আর এটা হলো ৯.৮৬ (সংযোগ সড়কসহ) অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ। তাছাড়া ফেরির যে চরিত্র, সেটা কিন্তু এক ছিল না। বঙ্গবন্ধু ব্রিজ যখন ফেরিতে ধরা হয়েছে, ১৯৯৫-৯৬ এর টোল ধরে করা হয়েছে। তারপরে দুই বার বাড়ানো হয়েছে। পদ্মায় তো প্রেজেন্ট টোলের রেট ধরে করা হচ্ছে।”

“ফেরির যে রেটটা, এটাই হল জেনারেল প্র্যাকটিস, ১ দশমিক ৫ গুণ, এই জিনিসটা একটু খেয়াল রাখতে হবে। তাও পরবর্তীতে যদি মনে করা হয় যে এটা বেশি হয়েছে,” বক্তব্য অসমাপ্ত রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

ফাইল ছবি

তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুর টাকা সেতু কর্তৃপক্ষকে ১ শতাংশ হার সুদে সরকারকে ফেরত দিতে হবে। সুতরাং সেতু কর্তৃপক্ষকে ওই জায়গা থেকে টাকা উপার্জন করতে হবে। পৃথিবীর কোথাও এই ধরনের স্থাপনার ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় পয়সা না দিয়ে যাওয়ার কোনো সিস্টেম নেই।”

আনোয়ারুল বলেন, “ফিজিবিলিটি স্টাডিতে যেমন ছিল যে, ২৪ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে টাকাটা (পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়) উঠে আসবে। এখন মনে হচ্ছে ১৬/১৭ বছরের মধ্যেই টাকাটা উঠে আসবে। ওই পাড়ের যেসব কাজকর্ম এবং যেগুলো আছে সেগুলো ফিজিবিলিটি স্টাডিতে আসেনি। মোংলা পোর্ট যে এত স্ট্রং হবে, পায়রা বন্দর হবে, এত শিল্পায়ন হবে- এগুলো কিন্তু আসেনি।

“ধারণা ছিলো পদ্মা সেতু ১ দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি আনবে। এটা ২ এর কাছাকাছি চলে যাবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে।”