ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতের তিনজন হাকিম সোমবার আলাদাভাবে ১৬৪ ধারায় ওই তিনজনের জবানবন্দি নেন বলে দুদকের আদালত নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা মো. জুলফিকার জানিয়েছেন।
বিদেশে অবস্থানরত সিনহার বিরুদ্ধে করা এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার ওই তিনজনের জবানবন্দি নেওয়ার আবেদন করেন।
মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ চৌধুরীর খাস কামরায় জবানবন্দি দেন সিনহার ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা, মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের খাসকামরায় নেওয়া হয় সিনহার ভাতিজা শঙ্খজিৎ সিংহের জবানবন্দি, তার আত্মীয় সুজন কুমার সিংহ জবানবন্দি দেন মহানগর হাকিম মেহেদী হাসানের খাস কামরায়।
জুলফিকার বলেন, “জবানবন্দিদাতারা যেহেতু ঘটনার আগাগোড়া সব জানেন, পরে বিচারের সময় তারা যেন অভিযুক্ত কর্তৃক প্রভাবান্বিত হয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে না পারেন, সে জন্যই মূলত তাদের জবানবন্দি নেওয়া হয়।”
বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে গত বছরের ১০ অক্টোবর গুলশান আনোয়ার প্রধানই বাদী হয়ে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) মামলাটি করেন।
মামলায় ৭ কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং মুদ্রা পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিচারপতি এস কে সিনহা তার ভাইয়ের নামে অবৈধভাবে বরাদ্দ নেওয়া পূর্বাচলের প্লটটি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে উত্তরার সেক্টর-৪ এ স্থানান্তর করেন। পরে রাজউক থেকে অনুমোদনও করান। আর প্লটের যাবতীয় অর্থ মোট ৭৫ লাখ টাকা নিজেই পরিশোধ করেন। পরে ওই প্লটে ৯ তলা ভবন নির্মাণ করেন, যাতে ব্যয় হয় ৬ কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। এছাড়া প্লটের মূল্য হিসেবে রাজউকে পরিশোধ করা হয় ৭৫ লাখ টাকা।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে ‘তোপের মুখে’ ২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। পরে বিদেশ থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।
গত বছরের ৯ নভেম্বর চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় বিচারপতি সিনহাকে ১১ বছর কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত।
এদিকে ‘অর্থ পাচার’ করে যুক্তরাষ্ট্রে তিনতলা একটি বাড়ি কেনার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছে দুদক। সেই মামলায় তার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহাকেও আসামি করা হয়েছে।