মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজের কার্যালয়ে ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর (পলিসি অ্যান্ড প্রোগ্রামিং) ইসোবেল কোলম্যান এবং ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমারের (আইআইএমএম) প্রধান নিকোলাস কোয়ামজিয়ানের নেতৃত্বে দুটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ভাসানচরে এখনো জাতিসংঘের এজেন্সিগুলো কার্যক্রম শুরু করেনি। এ ব্যাপারে আমি যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) সহযোগিতা চেয়েছি। যাতে দ্রুত সেখানে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম কার্যক্রম শুরু করে।"
কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে ১১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য সহাতায় জাতিসংঘ শুরু থেকেই কাজ করে আসছে। তবে কক্সবাজারের উপর চাপ কমাতে বাংলাদেশ সরকার যখন রোহিঙ্গাদের একাংশকে নোয়াখালীর জনবিরল দ্বীপ ভাসানচরে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়, তাতে শুরুতে বিরোধিতা করে বিশ্ব সংস্থাটি।
১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে ২৮ হাজারের মত রোহিঙ্গাকে নেওয়া হয়েছে।
কয়েক দফা আলোচনার পর জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ভাসানচরের বিষয়ে রাজি করাতে সক্ষম হয় সরকার। এর অংশ হিসেবে ইউএনএইচসিআর ও ডব্লিউএফপির ২১ সদস্যের যৌথ প্রতিনিধি দল গত জানুয়ারি মাসে নোয়াখালীর ওই দ্বীপ ঘুরে আসেন।
ভাসানচরে যে হাসপাতাল রয়েছে, সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সব রকমের ওষুধের ব্যবস্থা থাকলেও অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা নেই। জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা সেখানে অস্ত্রোপচরের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেছেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ইউএসএইড সরাসরি সাহায্য দেয় না। তারা ইউএনএইচসিআর ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকে আরও ফান্ড দেবে, যাতে তারা এখানে কাজ করতে পারে। দ্রুত এ সাহায্যটা দেওয়া হবে, যাতে তারা ভাষাণচরে কাজ শুরু করতে পারে।”
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে জাতিসংঘ প্রতিনিধিরা কী বলেছেন জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, "তারা বলছে, পৃথিবীতে প্রায় ৫০ লাখ শরণার্থী ছিল, এর সাথে ইউক্রেনের প্রায় ৭০ লাখ শরণার্থী যোগ হয়েছে, তারা এদের নিয়ে কাজ করছে। অন্যান্য শরণার্থী শিবিরে যেভাবে কাজ করছে এখানেও সেভাবে কাজ করবে। দ্রুত তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে তারা চাপ তৈরি করবে।
“নিকোলাসও বলেছে, এটার সমাধান হলো প্রত্যাবর্তন। আমরা যতগুলো অর্গানাইজেশন কাজ করছি, আমাদের মূল লক্ষ্য মিয়ানমারে তাদের নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা দিয়ে ফেরত পাঠানো। এরজন্য তারাও কাজ করছেন। মিয়ানমারের সাথেও তারা বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা জানালেন, মিয়ানমার সরকার তাদের সহযোগিতা করেনি বলে এটা সম্ভব হয়নি।"
মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করছিল, তার অগ্রগতি জানতে চাইলে এনামুর রহমান বলেন, "এটা নিয়ে গত মাসেই একটি মিটিং হয়েছে। সেখানে নাগরিকদের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে, মিয়ানমার সেটা গ্রহণ করেছে। এটা প্রক্রিয়াধীন।”
আরও পড়ুন