মাঠ না থানা, আলোচনা করে সিদ্ধান্ত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কলাবাগানের তেঁতুল তলা মাঠ খেলার মাঠ হিসেবেই থাকবে, না সেখানে থানার জন্য ভবন করা হবে, সে বিষয়ে ‘আলোচনা করে’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2022, 08:50 AM
Updated : 25 April 2022, 10:36 AM

থানার জন্য বিকল্প খোঁজার কথা জানালেও তিনি ইংগিত দিয়েছেন, বিকল্প জায়গা না পেলে ওই মাঠে ভবন তোলা হয়ত এড়ানো যাবে না।

ওই মাঠ রক্ষার জন্য আন্দোলনকারী এক নারী এবং তার ছেলেকে দিনভর থানায় আটকে রাখার ঘটনায় সমালোচনার মধ্যে সোমবার তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তেঁতুলতলা মাঠের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমরা যে খেলাধুলা করেছি,  সেই অবস্থাটা এখন আর নেই। আমরা সেজন্য কষ্টবোধ করি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। এর মূল কারণ আমাদের নগরায়ন, আমাদের জায়গা কম... ।

“কলাবাগানের প্রসঙ্গ যখন আসছে, আমরা যা কিছুই বলি, গুরুত্বের দিক দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটা বড় দায়িত্ব থাকে। আমরা যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হই, তাহলে সব কিছু মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে।"

দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া ভবনে কলাবাগান থানার কাজ চালিয়ে আসার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “ডিসি জায়গাটি খাস জমি বলে চিহ্নিত করে বরাদ্দ দিয়েছিল কলাবাগান থানাকে। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষে যখন ভবন নির্মাণ করতে যায়, তখন খেলার মাঠের দাবিতে...।

“আমাদের মেয়র বলেছেন, এই জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিতে। আমরা মনে করি, খেলার মাঠে বাচ্চারা খেলাধুলা করবে, এটাই স্বাভাবিক। এবং খেলার মাঠ যাতে থাকে, সে জন্য আমরা মনে করি খেলার মাঠের ব্যবস্থা করতে হবে।”

কলাবাগানের মাঠ রক্ষার আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে রোববার দিনভর আটকে রেখে মধ্য রাতে মুচলেকা রেখে বাসায় যেতে দেয় পুলিশ।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “মেয়রকে বলেছি, সবাইকে বলেছি, বিকল্প একটা খোঁজার জন্য। যদি না হয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও এটা অতীব জরুরি। এটা আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব, কী করা যায়।"

পান্থপথের দক্ষিণ পাশে কলাবাগানের ভেতরে ছোট্ট তেঁতুল তলা মাঠটিতে ওই এলাকার শিশুরা খেলে, নানা অনুষ্ঠানের আয়োজনও চলে সেখানে। মাঠটিতে কলবাগান থানা ভবন করার ঘোষণা দেওয়ার পর সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর সদস্য সৈয়দা রত্নার নেতৃত্বে স্থানীয়দের একটি দল ওই মাঠ রক্ষার আন্দোলন শুরু কেরেন।

পুলিশ এর আগে সেখানে নির্মাণকাজ শুরু করতে গেলে স্থানীয়দের বিশেষ করে নারীদের বিরোধিতার মুখে পড়ে। এরপর ওই মাঠ ঘিরে পুলিশ কাঁটাতারের বেড়া দিলেও রত্না তার বিরোধিতা করে যাচ্ছিলেন।

রোববার পুলিশ ওই মাঠে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু করলে রত্না তার ছেলেকে নিয়ে সেখানে যান। ফেইসবুকে তা লাইভ করার এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের ধরে থানায় নিয়ে যায়।

রত্নাকে আটকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান অধিকারকর্মী খুশি কবির, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বেলার সংগঠক আলমগীর কবির, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আবু আহমেদ ফয়জুল কবিরসহ উদীচীর নেতা-কর্মীরা। এলাকাবাসীও জড়ো হন সেখানে।

১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার পর সোমবার প্রথম প্রহরে আন্দোলন না করার মুচলেকা রেখে বাসায় ফিরতে দেওয়া হয় মা আর ছেলেকে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাকে সন্ধ্যার পরে অনেকেই ফোন করেছিল। আমি ঘটনার যতটুকু জেনেছি, তারা লাইভ ভিডিওতে এসে অনেক কিছু প্রচার করছিল। যেগুলো নাকি একটু অসঙ্গতিপূর্ণ।

“সে জন্য বারবার নিবৃত করার পরেও আইনশৃংখলা বাহিনী যখন থামাতে পারেনি, তখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।"