মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের উপ-পরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধান।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুর দুপুর ২টায় বের হন এস কে সুর চৌধুরী। এরপর উপস্থিত সাংবাদিকরা ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন তাকে।
তিনি শুধু বলেন, “আমার যা বলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বলেছি।”
এরপর কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দুদক কার্যালয়ের সামনের সড়কে রাখা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে চলে যান তিনি।
এরপর দুপুর সোয়া ২টায় বের হন শাহ আলম। তাকেও পি কে হালদারের ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তিনিও কোনো জবাব না দিয়ে দুদক প্রধান ফটকের বাইরে রাখা তার ব্যক্তিগত গাড়িতে উঠে যান।
দুদকের নোটিস পেয়ে এর আগে সকাল ১০টায় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে এসেছিলেন এস কে সুর চৌধুরী ও শাহ আলম।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে ‘অস্তিত্বহীন’ প্রতিষ্ঠানের নামে আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ২৪ মার্চ অনুসন্ধান কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধান তাদেরকে তলব করে নোটিসে পাঠান।
তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “আইএলএফএসএল’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হককে গত বছর দুদক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পায়, ওই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছেন।
“জবানবন্দিতে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন এবং সেখানে দুটো নাম বেশি এসেছে, যারা লিজিং লুটের নেপথ্যে ছিলেন, একজন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম এবং ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।”
দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুখ খোলেননি শাহ আলমও।
আরেক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, “আর্থিক প্রতিষ্ঠান হোক বা যে কোনো প্রতিষ্ঠানই হোক, যদি আইন বহির্ভূত কোনো কিছু করে দুদক ব্যবস্থা নেবে।”
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের নিয়ন্ত্রণাধীন আইএলএফএসএল থেকে ‘কাগুজে’ প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইতোমধ্যে ২২টি মামলা করেছে দুদক।
এছাড়া এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ‘কাগুজে’ প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আরও ১৩টি মামলা করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। এসব মামলায় পি কে হালদারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
তার দুই সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী আদালতে যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে এস কে সুর ও শাহ আলমের নাম আসে।
অভিযোগ ওঠার পর গতবছর ৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলমকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি অবসরে রয়েছেন।
পুরনো খবর -