ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নে পাকিস্তানি তরুণরা উদ্যোগী হবে, আশা মোমেনের

একাত্তরে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে ওই দেশের তরুণ প্রজন্ম সোচ্চার হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2022, 10:55 AM
Updated : 26 March 2022, 10:55 AM

শনিবার স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বঙ্গবন্ধু স্মরণে স্থাপিত অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি আশা করব, পাকিস্তানের যত নতুন প্রজন্ম, যারা এর সাথে সম্পৃক্ত ছিল না, তারা এই ব্যাপারে অগ্রসর হয়ে আসবে।

“তাদের যদি নিজেদের বোধোদয় না হয়, তাহলে কিন্তু আরও অপকর্ম করার সম্ভাবনা আছে। সে কারণে আমার আশাবাদ এই দিনে যে, পাকিস্তানিরা স্বেচ্ছায় আমাদের কাছে জাতীয়ভাবে দুঃখপ্রকাশ করবে।”

একাত্তরে নিরীহ বাঙালিদের ওপর হত্যাযজ্ঞের পরও ক্ষমা না চাওয়াকে ’খুবই দুঃখজনক’ হিসেবে অভিহিত করে মোমেন বলেন, “আমি প্রায়ই বলি, পাকিস্তানিদের লজ্জা পাওয়া উচিত। এই জন্য যে- এত বড় যে নির্যাতন হয়েছে, গণহত্যা হয়েছে, তৎকালীন সময়ে এই যে পাকিস্তানি মিলিটারি জান্তা…

“এবং পাকিস্তান সরকারের রিপোর্টও বলেছে, অতিরিক্ত নির্যাতন করা হয়েছে। তারা মানবাধিকার লংঘন করেছে। তারা হিউম্যানিটারিয়ান যত ধরনের আইনকানুন, দেশিবিদেশি, সব লঙ্ঘন করেছে।”

মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচার পাকিস্তান সরকারের করা উচিৎ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যারা মৃত, তাদেরও মরণোত্তর শাস্তি দেওয়া ‍উচিত।

“এই যে অপরাধ করেছে, সেজন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত। কারণ এই অপরাধ অগ্রহণযোগ্য। এত বাজে অপরাধ!”

সিমলা চুক্তিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ১৯৫ সেনাকর্মকর্তার বিচারের ‘প্রতিশ্রুতির’ কথাও পাকিস্তানকে স্মরণ করিয়ে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

“তারা ওয়াদা দিয়েছিল সিমলাতে- যারা মানবতাবিরোধী করেছে, সেই ১৯৫ জন, তাদের শাস্তি দেবে। তারা যেন তাদের কথা স্মরণ করে, আমি এটা আশা করব।”

গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের জন্য বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক ফোরামে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সফরে আসা বিদেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়ার ভাবনার কথাও জানান তিনি।

বঙ্গবন্ধু স্মরণে স্থাপিত অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এ সময় অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী, সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস, ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর আসাদ আলম সিয়ামসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফরেন সার্ভিস একাডেমির কর্মকর্তা এবং প্রশিক্ষণার্থী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।