টিপুর শরীরে গুলির ১৩টি ক্ষত: সুরতহাল

ঢাকার শাহজাহানপুরে প্রকাশ্য রাস্তায় হত্যাকাণ্ডের শিকার সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুর শরীরে গুলির ১৩টি ক্ষত পাওয়ার কথা বলা হয়েছে পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2022, 01:42 PM
Updated : 29 March 2022, 12:33 PM

বৃহস্পতিবার রাতে ওই হামলায় টিপু ছাড়াও নিহত হন কলেজ শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতি; তার শরীরে দুটি গোলাকার ক্ষতের কথা সুরতহালে উল্লেখ করেছে পুলিশ।

টিপু ছিলেন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। শাহজাহানপুরের আমতলী এলাকায় মানামা ভবনের সামনের সড়কে রাত ১০টার দিকে তার গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে হেলমেট পরা এক অস্ত্রধারী।

ওই সময় টিপুসহ গাড়ির কাছেই রিকশায় থাকা বদরুন্নেছা সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতিও গুলিতে নিহত হন। আহত হন টিপুর গাড়ি চালক মুন্না।

জাহিদুল ইসলাম টিপু

টিপুর সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, গলার বাঁ পাশে একটি, বুকের বাম পাশের উপরের দিকে একটি, পেটের মধ্যস্থলে একটি, বুকের বাঁ পাশের বগলের কাছাকাছি একটি, বাঁ কাঁধের উপরে ও নিচে দুটি, পিঠের বাঁ পাশে কোমর বরাবর ওপরে চারটি, পিঠের ডানপাশে একটি, ডান নিতম্বে তিনটি গোলাকার ক্ষত চিহ্ন রয়েছে।

সুরতহাল করার সময় ক্ষতচিহ্ন দিয়ে ‘রক্ত ঝরছিল’; এছাড়া বুকের ডানপাশে এক ইঞ্চি থ্যাঁতলানো কালো জখম ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন শাহজাহানপুর থানার পরিদর্শক ঠাকুর দাস মালো।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতের স্ত্রী, সন্তান, নিকট আত্মীয়, ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে উপস্থিত লোকজন জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ‘পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী’ এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে টিপু গুরুতর জখম হন এবং হাসপাতালে মারা যান।

সামিয়া আফনান প্রীতি

টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নারী কাউন্সিলর। হামলার ঘটনায় শুক্রবার সকালে তিনি শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, “আমার স্বামীর গলার ডান পার্শ্বে, বুকের বাঁ পাশের উপরে, বুকের বাঁ পার্শ্বে বগলের কাছাকাছি, পেটের মধ্যভাগে নাভির উপরে, বাঁ কাঁধের উপরে ও নিচে, পিঠের বাঁ পার্শ্বে মাঝামাঝি স্থানে, পিঠের বাঁ পার্শ্বে কোমর বরাবর, পিঠের ডান পার্শ্বে কোমরের উপরে একাধিক স্থানে, পিঠের ডান পার্শ্বের বাহুর নিচে ও নিতম্বের ডান পাশের নিচে একাধিক স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়।”

রিকশা আরোহী প্রীতির সুরতহাল প্রতিবেদনে এসআই তমা বিশ্বাস তার শরীরে বুকের উপরিভাগে এবং পিঠের ডান পাশে দুটি গোলাকার ক্ষত চিহ্নের কথা উল্লেখ করেছেন।

সে হিসাবে সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী দুজনের শরীরে মোট ১৫টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১২টি গুলির খোসা উদ্ধার করে।

হাসপাতালের মর্গে টিপুর মরদেহ

এ বিষয়ে জানতে চাইলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক গুলি শরীরের এক দিকে ঢুকে অন্য দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। তখন একটি গুলিতে দুটি ক্ষত হয়। তাই ক্ষত চিহ্ন দিয়ে গুলির সাংখ্যা কাউন্ট করা ঠিক হবে না।”

বৃহস্পতিবার রাতে হামলার পর টিপু এবং প্রীতিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, তারা আগেই মারা গেছেন।

হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার দুপুরে স্বজনরা দুজনের মৃতদেহ দাফনের জন্য দিয়ে যান।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক জান্নাতুন নাঈম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন