ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে ‘অস্তিত্বহীন’ প্রতিষ্ঠানের নামে আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে ২৯ মার্চ তলব করে বৃহস্পতিবার আলাদা নোটিস পাঠানো হয়েছে।
দুদকের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধানের স্বাক্ষরে পাঠানো নোটিসে ওই দিন তাদের সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত বলা হয়েছে।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের নিয়ন্ত্রণাধীন আইএলএফএসএল থেকে 'কাগুজে' প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইতোমধ্যে ২২টি মামলা করেছে দুদক।
এছাড়া এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে 'কাগুজে' প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আরও ১৩টি মামলা করেছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। এসব মামলায় পি কে হালদারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
তার দুই সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী আদালতে যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে এস কে সুর ও শাহ আলমের নাম আসে।
পিপলস লিজিংয়ের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীরাও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে আসছেন। তাদের আবেদনে হাই কোর্ট গতবছর যে ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তাদের মধ্যে এস কে সুর চৌধুরীর নামও ছিল।
অভিযোগ ওঠার পর গতবছর ৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলমকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে তিনি অন্য বিভাগের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আর এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি অবসরে রয়েছেন।
গতবছর জুলাই মাসে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীর সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধেরও (ফ্রিজ) নির্দেশনা দেয় এনিবআর।
পিকে হালদার নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।
এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন এবং এ কাজে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার ‘যোগসাজশ’ ছিল বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।
এসব অভিযোগে আলাদা অনুসন্ধান ও তদন্ত করছেন দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান দল।