ঊর্ধ্বমুখী ব্যয়ের কারণে দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় তাল সামলাতে গিয়ে নিরুপায় হয়ে মন খারাপ করা এমন সিদ্ধান্ত নিতে অনেকটা বাধ্যই হয়েছেন তারা। তবে ওমিক্রনের কারণে ঊর্ধ্বমুখী কোভিড পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকার সময়টুকু যেন তাদের কিছুটা স্বস্তিই দিয়েছে।
“বেশ কিছুদিন ধরেই নিত্যপণ্যের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় হওয়ায় প্রায় প্রতিমাসেই আয়ের চেয়ে বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। চাকরিজীবী একজনের আয়ে তা আর সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।“
মার্চের প্রথম দিন মেয়ের স্কুল ব্যাগ কেনার সময় রাজধানীর বনশ্রী আবাসিকের একটি দোকানে জীবনযাত্রায় ঊর্ধ্বমুখী ব্যয়ের নিয়ে কথা উঠলে হতাশ কণ্ঠে এমনটিই বললেন শিরিন রুনা।
তার ভাষ্য, খাওয়াসহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের পেছনেই ব্যয় বেশি। অন্যকিছু কাটছাঁট করলেও খাওয়ার সঙ্গে তো আর খুব বেশি আপস করা যায় না। তবুও মাসের বাজার করতে গিয়ে কিছু কেনাকাটা বাদও দিতে হচ্ছে।
এক দশক থেকে ঢাকায় থাকা এ দম্পত্তির মতো মূল্যস্ফীতির গ্যাড়াকলে এখন নির্দিষ্ট ও সীমিত আয়ের অনেক পরিবারকেই রীতিমত সংগ্রাম করতে হচ্ছে। মাস শেষে হিসাবের ফর্দ মেলাতে কষ্ট হচ্ছে তাদের; বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে কাটছাঁট।
৬ বছরে পণ্যমূল্য যেভাবে বেড়েছে
আর দিন এনে দিন খাওয়া, একেবারে সীমিত আয় কিংবা নিম্নআয়ের মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা তৈরি হয়েছে। নিত্যপণ্যের বাজারে গিয়ে মুখোমুখি হতে হচ্ছে কঠিন বাস্তবতার। নির্দিষ্ট আয়ে সংসার চালাতে প্রতিমাসেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। সঞ্চয় তো দূরের কথা, জমানো টাকাও ভেঙে খরচ করতে হচ্ছে। আর অসুস্থতা, দুর্ঘটনা কিংবা উৎসবে ধারদেনা ছাড়া পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার উপায় থাকছে না অনেকের।
দৈনিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল ঢাকায় থাকা রিকশাচালক বগুড়ার নাজের হোসেনও স্বস্তিতে নেই। ২০১৭-১৮ সালের দিকে রাজধানীর রাস্তায় দৈনিক ১২ ঘণ্টা পায়ে চাপা রিকশা চালিয়ে গড়ে আয় করতেন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। তখন মাস শেষে অনায়াসেই নয় হাজার টাকা বাড়িতে পাঠাতে পারতেন, পরিবারে সেভাবে অভাব-অনটন ছিল না।
পাঁচ বছরের মাথায় এখন তার আয় প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ১৭ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা হলেও স্বস্তিতে নেই এ রিকশাচালক। কারণ, তার ভাষায় আয় বাড়লেও জীবন চলছে ঠিক আগের মতোই। নাজের বাড়তি যেই ৮ হাজার টাকা বেশি আয় করেন, ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় এর পুরোটাই খরচ হয়ে যায়।
এমন প্রেক্ষাপটে রোজার আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দাম নেওয়া ঠেকাতে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ‘অ্যাকশনে’ নামার ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার সচিবালয়ে নিত্যপণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি গণমাধ্যমকে একথা পচার করতে বলেন।
টিপু মুনশি বলেন, “মিডিয়া যেন প্রচার করে যে, দ্রব্যমূল্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে সরকার। কেউ দাম বাড়ালে আমরা অ্যাকশনে যাচ্ছি।”
মূল্যস্ফীতির খাড়া
কোভিড মহামারীকালে ২০২০ ও ২০২১ সালে অনেকে চাকরি বা কাজ হারিয়েছেন। কেউবা নিজের স্বল্প পুঁজির ব্যবসা হারিয়ে শহর ছেড়ে গ্রামমুখী হতে বাধ্য হয়েছেন। আর এর আগে-পরে মিলে গত পাঁচ বছরে গড়ে সাড়ে ৫ শতাংশ হারে মূল্যস্ফীতি হয়েছে বলে জানাচ্ছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
সরকারি এ সংস্থার হিসাবে দেখা যায়, ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বছরে বছরে মোট ২৮ দশমিক ০৭ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। ফলে ২০১৭ সালে ১০০ টাকা দিয়ে যে পণ্য কেনা যেত ২০২১ সালে এসে সেটি কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১৩১ টাকা ৪১ পয়সা।
পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বিবিএসের দেওয়া এ মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে দ্বিমত করেছেন।
তার মতে, সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ে যে তথ্য দিচ্ছে বাস্তবে মানুষের ধারণার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই।
বাজারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শুধু শহরাঞ্চলে নয়, দেশজুড়ে জীবনযাত্রার ব্যয়- যেমন জ্বালানি তেল, রান্নার চুলার গ্যাস, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, বিদ্যুৎ, গণপরিবহনের ভাড়া বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) মনিটরিং সেলের হিসাবে, গত পাঁচ বছরে চাল-ডাল, তেল, লবণ, হলুদ-মরিচ, সবজি, মসলাসহ জীবনধারনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম অনেক ক্ষেত্রে ৫০ ভাগেরও বেশি বেড়েছে।
যেমন- এসময়ে সয়াবিন তেল ৩৮ শতাংশ আর পাম তেল ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গরুর মাংসের দাম ১৫ শতাংশ, খাসির মাংস ২৩ শতাংশ এবং দেশি মুরগির দাম বেড়েছে ৩৯ শতাংশ।
এসময়ে চিকন চাল ১৪ শতাংশ, মাঝারি ২১ শতাংশ এবং মোটা চাল ২২ শতাংশ দাম বেড়েছে। আটার দাম ১৯ শতাংশ, ময়দার দাম ১৪ শতাংশ এবং সুজির দাম বেড়েছে ২১ শতাংশ।
গত পাঁচ বছরে সব ধরনের সবজির দাম কমপক্ষে ১১ থেকে ২৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, বিবিএস মূল্যস্ফীতির যে তথ্য প্রকাশ করছে তার চেয়ে দরিদ্র, মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের নিত্যদিনের কেনাকাটায় থাকা পণ্যের মূল্যস্ফীতি প্রায় দ্বিগুণ।
“আমরা একটা হিসাব করে দেখেছি বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন অফিসিয়াল ডেটার চেয়ে দ্বিগুণ। ২০০৫-০৬ এর হাউজহোল্ড সার্ভের ডেটার ওপর ভিত্তি করে এখনকার মূল্যস্ফীতি হিসাব করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মানুষের ফুড হেবিটের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। দ্বিতীয় যে ধরনের পণ্যমূল্য বিবেচনায় নিয়ে মূল্যস্ফীতি হিসাব করা হচ্ছে সাধারণ মানুষজন সেগুলো ভোগ করে না।“
নিম্ন আয়ের মানুষের সামগ্রিক খরচের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ খাদ্য সম্পর্কিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ খাদ্যদ্রব্যের মূল্যই এখন বেশি বেড়েছে। ধনীদের খাদ্যের পেছনে খরচটা সার্বিক খরচের তুলনায় কম।
“এটা খুব বড় ধরনের একটা ঘটনা। বাংলাদেশে কোভিড মহামারীর সময়ে যে সঙ্কট শুরু হয়েছিল, সেই সঙ্কটের মধ্যে মূল্যস্ফীতি একটা বাড়তি বোঝা হিসাবে আসছে।“
ফেব্রুয়ারির চিত্র আরও খারাপ
সর্বশেষ ফেব্রুয়ারির বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করলে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতির আরও খারাপ চিত্র ফুটে উঠে।
গত দুই মাস ধরে চড়া হতে শুরু করেছে সরু চালের বাজার। ২০১৭ সালে সরু চালের কেজি গড়ে ৫৮ টাকার মধ্যে থাকলেও চলতি ফেব্রুয়ারিতে তা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়, দাম বেড়েছে ২১ শতাংশ।
মোটা দানার মসুর ডাল গত কয়েক বছর ধরে ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে থাকলেও এখন তা ১০০ টাকায় পৌঁছে গেছে, দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। অবশ্য ২০১৭ সালেও মসুর ডালের দাম বেড়ে ৯০ টাকায় উঠেছিল।
ওই বছরজুড়ে প্রতি কেজি আটা ৩২ টাকায় এবং ময়দা ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। টিসিবির প্রতিবেদন বলছে, এ দুই নিত্যপণ্যের দাম এখন যথাক্রমে ৪৫ টাকা ও ৬০ টাকা। সেই হিসাবে আটার দাম ৪১ শতাংশ এবং ময়দার দাম ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।
একইভাবে বর্তমানে চিনির মূল্য ১৯ শতাংশ বেড়ে কেজি ৮০ টাকায়, খোলা সয়াবিন তেল ৬৯ শতাংশ বেড়ে কেজি ১৬৭ টাকায়, বোতলজাত সয়াবিন তেল ৬০ শতাংশ বেড়ে ১৬৮ টাকায়, পাম তেলের দাম ৯৬ শতাংশ বেড়ে ১৪৭ টাকায়, গরুর মাংস ২৫ শতাংশ বেড়ে ৬৫০ টাকায়, খাসির মাংস ২৮ শতাংশ বেড়ে ৯২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া, ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়াসহ সর্বোপরি দুই বছর মহামারীর পরাঘাতের কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বুঝতে কষ্ট হচ্ছে নুরুল ইসলামের
সয়াবিন তেলের চড়া দাম গণমাধ্যমের খবরে আসছে কদিন পরপরই। দেশের বাজারে রেকর্ড উচ্চমূল্যে গিয়ে ঠেকেছে রান্নার অত্যাবশীয় এ তেল। বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহকারী ও পরিশোধনকারী ব্যবসায়ীদের সমিতির সচিব হিসেবে কর্মরত নুরুল ইসলাম মোল্লা নিজেও দাম বাড়ার এ ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে এখন সয়াবিন তেলসহ সবগুলো জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ছোলা বুটের বাজার ধীরে ধীরে চড়ে যাচ্ছে। যেই শাকের আঁটি ৫/১০ টাকা ছিল সেটা এখন ২০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। লাউয়ের দাম ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা। ফুলকপি ৫০ টাকা। দেশের কী যে হলো কিছুই বুঝতে পারলাম না।
হতাশার সুরে তিনি বলেন, মহামারীর কারণ দেখিয়ে বেসরকারি কোম্পানি বেতন আর বাড়ায় না। কিন্তু মহামারীর কারণেই এখন সব পণ্যের দাম বেড়ে গেল। আমরা ঠিকমতো চলতে পারছিনা, কারও কাছে বলতেও পারছি না।”
কষ্টে আছেন নির্মাণ শ্রমিক বাচ্চু
দৈনিক ৬৫০ টাকায় নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করা বাচ্চুর মজুরি গত পাঁচ বছরে মোটেও বাড়েনি। ফলে মহামারীর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে শহুরে জীবনে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে গেছেন তিনি।
পুঁজি ‘ক্ষয়ে যাচ্ছে’ ফরিদের
মিরপুর ছাপরা মসজিদের পাশে পাঁচ বছর আগে ১২ লাখ টাকা পুঁজিতে স্টেশনারি ও খেলনার দোকান নিয়ে বসেছিলেন ফরিদ হাসান। শুরুর দিকে ব্যবসা কিছুটা ভালো চললেও মহামারীর দুই বছরে একদিকে ব্যবসা কমে যাওয়া অন্যদিকে সংসারের খরচ বেড়ে যাওয়ায় মাসে মাসে পুঁজি ক্ষয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন তিনি।
উপায় না দেখে মাসে ১২ হাজার টাকা ভাড়ার বাসাটির একটি কক্ষ ৫ হাজার টাকায় সাবলেট দিয়েছেন।
সম্প্রতি এ দোকানি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দোকানের পেছনে মাসে ১৮ হাজার টাকার ওপরে খরচ আছে। এরমধ্যে জানুয়ারিতে দোকান ভাড়া দুই হাজার বেড়ে ১২ হাজার টাকা হয়েছে।
“কিন্তু মাস শেষে খরচ বাদে ১৫ হাজার টাকাও মুনাফা থাকছে না। দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলের পড়াশোনার খরচ বহনের দায়িত্ব নিয়েছেন তার মামা-খালারা। আমি কোনো রকমে সংসার চালিয়ে নিচ্ছি। মহামারী শুরুর পর গত দুই বছরে একদিকে আয় কমেছে, অন্যদিকে খরচ বেড়েছে অস্বাভাবিক।“
উপায় কী?
ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বাড়ার পাশাপাশি জাহাজ ভাড়া বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে বাজারে। এখন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় শঙ্কা আরও বেড়েছে। টাকার বিপরীতে ডলার শক্তিশালী হওয়ার বিষয়টিও পণ্যবাজারে প্রভাব ফেলেছে। আর পণ্যের আমদানি খরচ বাড়লে সেই হারে শুল্কও বাড়তে থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে যেসব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে সেগুলোকে সরকারের শুল্কমুক্ত ঘোষণার তাগিদ দেন তিনি।
সাবেক এ সচিব মানুষের আয় বাড়াতে বিশেষ কর্মসংস্থানের
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুরও এখন নিত্যপণ্যের ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক তুলে নেওয়ার কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমদানি শুল্ক, কাস্টমস ডিউটিসহ তুলে দেওয়া উচিত।
“চালের দাম এখন বেশি আছে। সেই ক্ষেত্রে তিন বা ছয় মাসের জন্য বেসরকারিভাবে চাল আমদানির সুযোগ দিলে এ সঙ্কট কমে যেত। বর্তমানে চাল আমদানির ওপর ৩১ শতাংশ কাস্টম ডিউটি রয়েছে।”
অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান বলেন, যারা একসময় স্বচ্ছল জীবনযাপন করতেন, মাসিক সুনির্দিষ্টভাবে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করতেন, তাদেরই কেউ কেউ এখন দারিদ্র্যসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। তাদের কিন্তু বেশ টানাপড়েনের মধ্যে আছেন। তাদের সীমিত আয়ের পথগুলো সঙ্কুচিত হয়েছে পাশাপাশি জিনিসপত্রের দামটা বেড়েছে।
নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত এমন জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক কারণে হুট করে অন্য কোনো পেশায় যাওয়া কষ্টকর। আবার তারা সামাজিক সুরক্ষা বা এই ধরনের কোনো সরকারি সহযোগিতাও পাচ্ছে না। এ কারণে দরিদ্র্যদের চেয়ে নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর সংকট কিন্তু বেশ গভীরতর সংকট বলে তিনি মন্তব্য করেন।