চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে বনানী থানার মাদক আইনের মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 01 Mar 2022, 02:46 PM
ওই মামলা কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
পরীমনির এক আবেদেনের শুনানি করে হাই কোর্ট মঙ্গলবার রুলসহ এই স্থগিতাদেশ দেয়। এর ফলে জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে থাকা এ মামলার কার্যক্রম এখন আটকে গেল।
আদালতে পরীমনির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও সৈয়দা নাসরিন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াহিয়া ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।
পরে মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এই স্থগিতাদের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে নোট দেব।”
ঢাকার বনানী থানায় করা ওই মামলায় গত ৫ জানুয়ারি পরীমনিসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নজরুল ইসলাম।
মঙ্গলবার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন মামলার বাদী সিআইডির পরিদর্শক মজিবর রহমানের জবানবন্দি শুনেছে আদালত।
গত ৪ অগাস্ট রাতে বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
র্যাবের জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘মদ এবং আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা বলা হয়।
পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেছিলেন, পরীমনির ফ্ল্যাটে ‘মিনি বার’ ছিল। তিনি নিয়মিত মদ পান করতেন এবং ‘ঘরোয়া পার্টি’ আয়োজন করতেন। তার কাছে মদ ব্যবহারের একটি লাইসেন্স পাওয়া গেলেও তার মেয়াদ শেষ হয়েছে ‘অনেক আগে’।
এই অভিনেত্রীকে গ্রেপ্তারের পর তিন দফা রিমান্ডে নেওয়া নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে হাই কোর্টও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। পরে গতবছরের ৩১ অগাস্ট বিচারিক আদালত তার জামিনের আদেশ দেন। পরদিন তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ছাড়া পান।
তদন্ত শেষে গত ৪ অক্টোবর পরীমনিসহ তিনজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। পরে তিনজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় জজ আদালত।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন, পরীমনির ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম দিপু এবং পরীমনির খালু কবীর হোসেন হাওলাদার। তারা সবাই জামিনে আছেন।
প্রথম দিনের সাক্ষ্য
বনানী থানার এই মামলার বাদী সিআইডির পরিদর্শক মজিবর রহমান মঙ্গলবার ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে সাক্ষ্য দেন। তবে পরীমনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তার হয়ে হাজিরা দেন তার আইনজীবী নিলাঞ্জনা রিফাত সুরভী।
বাদী তার সাক্ষ্যে মাদক উদ্ধারের দিনক্ষণ, জব্দ করা মাদকের তালিকা এবং ওই দিন অভিযানে থাকা র্যাব সদস্যদের পরিচয় তুলে ধরেন।
পরে পরীমনি ও কবীর হাওলাদারের পক্ষে আইনজীবী মো. মাজেদুর রহমান মামুন এবং দিপুর পক্ষে আইনজীবী এস এম আখতারুজ্জামান হিমেল বাদীকে জেরা করেন।
পরীমনির পক্ষে জেরা শেষ না হওয়ায় আইনজীবী সময়ের আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করে ২৯ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করে দেন।
কিন্তু এরপর হাই কোর্ট থেকে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ আসায় সাক্ষ্যগ্রহণের বিষয়টি ঝুলে গেল।