পি কে হালদারসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা

এফএএস ফাইন্যান্স থেকে ৩৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ‘কাগুজে' প্রতিষ্ঠান ‘নেচার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’র নামে ঋণ দেখিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা পি কে হালদারসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2022, 01:32 PM
Updated : 24 Feb 2022, 01:32 PM

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক জানান, বৃহস্পতিবার কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।

মামলায় প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার ছাড়াও আসামি করা হয়েছে নেচার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের পরিচালক মমতাজ বেগমকে। তার স্বামী মো. নওশেরুল ইসলাম ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের পরিচালক, মেরিন ট্রাস্ট লিমিটেডর চেয়ারম্যান এবং নেচার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

এছাড়া এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক আবুল শাহজাহান, ডা. উদ্দাব মল্লিক, প্রদীপ কুমার নন্দী, অঞ্জন কুমার রায়, আতাহারুল ইসলাম ও অন্যান্য পরিচালক এবং সংশ্লিষ্টদের আসামি করা হয়েছে।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আসামিরা একে অপরের সহায়তায় প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির আশ্রয়ে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান ‘নেচার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’র নামে ঋণ গ্রহণের জন্য রেকর্ডপত্র প্রস্তুত করেন।

“এরপর এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ঋণ হিসেবে ৪৫ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়, এর মধ্যে ৩৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে তা আত্নসাৎ এবং পরে বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর ও গোপন করে পাচার করা হয়েছে বলে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।”

এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৫২৩ কোটি টাকা ১৩টি 'ভুয়া-কাগুজে' প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেখিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদারসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা করে দুদক। অর্থ পাচারের অভিযোগে এখন পর্যন্ত পি কে হালাদারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ৩৫টি মামলা করেছে দুদক।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।

এই চার কোম্পানি হল- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।

এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য। এর মধ্যে আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পি কে হালদারের বিদেশ পালিয়ে যান।

দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, পি কে হালদার তার নিজের, আত্মীয়, বন্ধু ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন কোম্পানিতে বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যার ‘বৈধ কোনো উৎস’ অনুসন্ধানে মেলেনি।

এসব অভিযোগে আলাদা অনুসন্ধান ও তদন্ত করছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান দল।

আরও পড়ুন