আইন হলেও প্রয়োগ যেন সঠিক হয়: সাবেক সিইসি হুদা

পাস হতে যাওয়া নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের সঠিক প্রয়োগের উপর জোর দিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2022, 05:25 PM
Updated : 26 Jan 2022, 05:25 PM

সেই সঙ্গে অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যাদের সুপারিশ করবে, তাদের নাম প্রকাশ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার ‘প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন: জনআকাক্ষা ও করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল গোলটেবিল বৈঠকে এ অভিমত জানান ২০০৭-২০১২ সালে দায়িত্ব পালন করা এই সিইসি।

বহুল আলোচিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ গত রোববার সংসদে উত্থাপন করে আইনমন্ত্রী। বৃহস্পতবার বিলটি পাসের জন্য তোলা হবে।

এই নিয়োগ আইন নিয়ে সর্বমহলে আলোচনার মধ্যে সাবেক সিইসি শামসুল হুদা বলেন, “আইনের ভিত্তি যদি হয় সর্বব্যাপী অবিশ্বাস, তাহলে এটা খুব মুশকিল। প্রতিটি স্টেজে প্রত্যেকটার মধ্যেই সন্দেহ। ব্রিটিশ আমল থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত শত শত আইন আছে।

“তার মধ্যে একে বিশ্বাস করতে পারছি না, ওকে বিশ্বাস করছি। এভাবে আইন করলে খুব অসুবিধা। সুতরাং আইনটা যেটা হচ্ছে, এটা সঠিকভাবে প্রয়োগ হবে- এ এজাম্পশনে আমাদের অগ্রসর হতে হবে।”

সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত নাম জনসম্মুখে প্রকাশের প্রস্তাব জানিয়ে সাবেক এ সিইসি বলেন, “রিকমেন্ডেশনটা করা হয় নিরপেক্ষতার জন্যে। দলীয় লোক হবে না, বায়াসড হবে না। …পাবলিক করা উচিত, কাদের কাদের রিকমেন্ড করছে সার্চ কমিটি।”

প্রস্তাবিতদের মধ্যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে জোর দেন তিনি।

শামসুল হুদা বলেন, “আমি যেটার উপরে খুব বেশি করে জোর দিতে চাই, কমিশনারদের নিয়োগ করার যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিষয়ে। যার বিরুদ্ধে এ ধরনের একটা কিছু থাকবে তাকে বাদ। দেশে তো লোকের অভাব নেই। সুতরাং কোনো ধরনের কোনো অভিযোগ, লিখিত-অলিখিত কিছু থাকে, তাকে নেওয়া যাবে না। এ দেশে অনেক ভালো লোক আছে।”

অনেক যোগ্যদের নামও আসে না বলে মনে করেন সাবেক সিইসি।

“আমি অনেক বছর সরকারি চাকরি করলাম, বেচারাদের কোনো কনসিডারই করা হয় না।”

তার কথায়, “স্পিরিটটা হবে আমরা একটা ভালো কমিশন আনছি। সেটা অবিশ্বাসের নয়, বিশ্বাসের ভিত্তিতে। কাউকে মিসবিলিভ করছি না, সেজন্যে গাদাগাদা ক্লজ লাগানোর দরকার নেই। সংক্ষেপে বলতে হবে, তার ক্যারেক্টারে কোনো ধরনের কিছু এডভার্স কিছু থাকতে পারবে না। সেটা কী, তা সার্চ কমিটি ও অন্যান্যরা বিবেচনা করবেন।”

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উদ্যোগে ড. রওনক জাহানের সঞ্চালনায় এ গোলটেবিল বৈঠকে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। অন্যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সিইসি এম সাখাওয়াত হোসেন, সুজনের নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক সিকান্দর খান, শফিউদ্দিন আহমেদ, সুজন জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ আবদুল আলীম, আর্টিকেল নাইনটিনের দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফয়সাল, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।