ইসি গঠনের বিল পাসের জন্য সংসদে উঠছে বৃহস্পতিবার

সংসদে উত্থাপিত নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের খসড়া আইনসভার চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উঠছে বৃহস্পতিবার।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2022, 12:09 PM
Updated : 26 Jan 2022, 12:09 PM

সংসদের সায় পেলে প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন পাবে বাংলাদেশ।

সংসদ সচিবালয় থেকে জানা গেছে, আইনমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিলটি পাসের প্রস্তাব সংসদে তুলবেন।

জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাস হবে কি না জানি না, আমি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) প্রস্তাব তুলব।”

বহুল আলোচিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ গত রোববার সংসদে উত্থাপন করে আইনমন্ত্রী।

পরে বিলটি পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

সিইসি ও কমিশনার নিয়োগে যোগ্যতা-অযোগ্যতার অংশে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ করে বিলের প্রতিবেদন বুধবার সংসদে উপস্থাপন করেন কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার।

আইনমন্ত্রী বিলটি পাসের জন্য সংসদে প্রস্তাব করার পর এর উপর সংসদ সদস্যরা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনীর প্রস্তাব তুলবেন। তখন বিলটি নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে।

সংসদ চাইলে সংসদীয় কমিটির সুপারিশসহ কিংবা সংসদে যেরকম স্থির করা হবে, সেভাবে খসড়া আইনটি পাস হবে।

সাধারণত সংসদীয় কমিটির সুপারিশ সংসদে গ্রহণ করা হয়।

বিলটি সংসদে পাসের পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে আইন কার্যকর হবে।

তখন এই আইনের অধীনে রাষ্ট্রপতি নতুন ইসি গঠন করবেন।

কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির মেয়াদ আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ফুরিয়ে যাবে বলে তার আগে নতুন ইসি গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির দুই সপ্তাহের মতো সময় পাবেন।  

আইনের প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশের সংবিধানে বলা আছে, সাংবিধানিক সংস্থা ইসিতে কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। আর তা একটি আইনের অধীনে হবে।

এতদিন সেই আইন না হওয়ায় প্রতিবারই ইসি গঠনের সময় শুরু হয় বিতর্ক।

তা এড়াতে ২০১২ সালে নতুন কমিশন নিয়োগের সময় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটি নামে একটি মধ্যস্থ ফোরাম তৈরি করেন, যেটি নিয়েও পরে বিতর্ক হয়।

এ পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একজন বিচারপতির নেতৃত্বে বিশিষ্ট কয়েকজন নাগরিকদের নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করেন।

ওই সার্চ কমিটি সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হতে যোগ্যদের নামের একটি তালিকা তৈরি করেন। সেই তালিকা থেকে একজন সিইসিসহ অনধিক পাঁচজন কমিশনার নিয়োগ দেন।

এরপর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৭ সালে সেই পদ্ধতিই অনুসরণ করেছিলেন। এবারও একই পদ্ধতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

কিন্তু সংলাপে অংশ নেওয়া ২৫টি দলের প্রায় সবগুলো ইসি গঠনে স্থায়ী সমাধান হিসেবে আইন প্রণয়নের উপর জোর দেয়।

১৭ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শেষ হওয়ার আগে সেদিনই আকস্মিকভাবে মন্ত্রিসভায় নতুন আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।

এরপর ২৩ জানুয়ারি আইনমন্ত্রী ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ সংসদে উত্থাপন করেন।