“আওয়ামী লীগ ইনডেমনিটি দেয় না, এটা জানা উচিৎ। এখানে কাউকে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়নি,” সমালোচনার জবাবে বলেছেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন গঠনে ৫০ বছর পর আইন প্রণয়নের উদ্যোগে রোববার সরকার অনুমোদিত বিল সংসদে উত্থাপন করা হয়।
আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পরীক্ষা করে দুটি স্থানে পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতোপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।”
সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, “আইনের ৯ ধারায় ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। এটা আইনের ‘বেসিক কনসেপ্টের’ পরিপন্থি। রেস্ট্রোসপেকটিভ ইফেক্ট দেওয়া আইনের চোখে কখনো ভালো চোখে দেখা হয় না।”
এর আগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা প্রস্তাবিত আইনে ‘অসম্পূর্ণতা’ দেখা কথা জানিয়ে বলেছিলেন, “কোনো বিশেষ পদধারী ব্যক্তির অপরাধের বিচারের জন্য ইনডেমনিটি থাকা উচিত নয়।”
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ফাইল ছবি
সোমবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অংশ নেওয়া আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে সাংবাদিকরা এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি প্রথমেই দায়মুক্তির বিষয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ইনডেমনিটি কারা দিয়েছিল? ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স কারা করেছিল? বরং আওয়ামী লীগই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করেছিল।”
ইসি নিয়োগের আইনটি নিয়ে তিনি বলেন, “আইনে দুটো জিনিস আছে। একটা হচ্ছে ইনডেমনিটি আর একটা হচ্ছে লিগ্যাল কাভারেজ। দুটো কিন্তু এক জিনিস না।
“ইনডেমনিটি হচ্ছে মাফ করে দেওয়া, তাদের আইনের আওতা থেকে বের করে দেওয়া। লিগ্যাল কাভারেজ হচ্ছে আইনের ভেতরে আনা। দফা ৯ এ পরিষ্কারভাবে পড়ে দেখেন, কারও কৃতকর্মকে ইনডেমনিটি দেওয়া হয় নাই।”
সুনির্দিষ্ট আইন না হওয়ায় বরাবরই ইসি গঠনের সময় বিতর্ক ওঠে। বর্তমান ইসির মেয়াদ আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ফুরোচ্ছে বলে এবার আইনটি করে নিয়োগের দাবি উঠলে গত মাসে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, এবার তা সম্ভবপর হচ্ছে না।
কিন্তু রাষ্ট্রপতি আগের মতো সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ায় সংলাপ শুরু করলে তাতে অংশ নিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল আইনে প্রণয়নের উপর জোর দেয়।
এরপর গত সোমবার মন্ত্রিসভায় খসড়া আইনটি অনুমোদনের পর রোববার বিল তোলা হয় সংসদে। আর একদিনের মধ্যেই সংসদীয় কমিটি বিলটি ফেরত দেয়।
এই আইন করার ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি এবং গোপনীয়তার যে অভিযোগ উঠেছে, তাও নাকচ করেন আনিসুল হক।
তিনি বলেন, “যখনই আইনটি কেবিনেটে পাস হয়েছে তাৎক্ষণিক ল’ লেজিসলেটিভ বিভাগের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। আর এটা নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে।
“আমি তো বুঝলাম না এখানে গোপনীয়তা কী? আর আমরা এত বোকা না, এই আইনটা গোপন করে আমার কী লাভ?”