‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২১’ শীর্ষক এ আইনের খসড়ায় অন্যের জমির মালিক হতে জাল দলিল তৈরির পাশাপাশি মালিকানার চেয়ে বেশি দলিল করা, অতিরিক্ত জমি লিখে নেওয়া, আগে বিক্রি বা হস্তান্তরের পরও গোপনে বিক্রি করা, বায়না করা জমি পুনরায় বিক্রি করতে চুক্তিবদ্ধ হওয়া কিংবা ভুল বুঝিয়ে দানপত্র তৈরির মতো অপরাধগুলো হচ্ছে বলে তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়া সহ উত্তরাধিকারীকে ঠকিয়ে নিজের অংশের চেয়ে বেশি জমি নিজের নামে দলিল করে নেওয়ার মতো অপরাধও করা হয় বলে আইনের প্রাথমিক খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে।
শনিবার প্রস্তাবিত আইনটির প্রাথমিক খসড়া (বিল) সবার মতামতের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (https://minland.gov.bd/) প্রকাশ করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
এ আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে ডিসি সম্মেলনে গত বৃহস্পতিবার ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, অবৈধ ভূমি দখলকে ফৌজদারি অপরাধের আওতায় এনে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২১’ এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।
ভূমি দস্যুতা রোধেও এ আইন কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রাথমিক খসড়ায় ব্যক্তি মালিকানাধীন বা সরকারি খাস ভূমিসহ সরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার মালিকানাধীন ভূমিতে প্রকৃত মালিকদের স্বত্ব ও দখলভোগ নিশ্চিত করাকে এ আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ভূমি লোভী কোনও ব্যক্তির জালিয়াতি বা প্রতারণার মাধ্যমে এবং অন্যের সঙ্গে যোগসাজশ করে দলিল করে বা কোনও দলিল ছাড়াই অবৈধভাবে ভূমির দখলগ্রহণ বা দখলগ্রহণের চেষ্টা বা এর ক্ষতি রোধে ভূমিকা রাখবে এ আইন।
খসড়ায় চিহ্নিত করা হয়েছে যেসব অপরাধ
>> অন্যের জমির মালিক হতে জাল দলিল তৈরি।
>> মালিকানার অতিরিক্ত জমির দলিল করা।
>> মালিকানার অতিরিক্ত জমি লিখে নেওয়া।
>> আগে বিক্রি বা হস্তান্তর গোপন করে জমি বিক্রি।
>> বায়না করা জমি আবার বিক্রি করতে চুক্তি করা।
>> ভুল বুঝিয়ে দানপত্র ইত্যাদি তৈরি করা।
>> সহ উত্তরাধিকারীকে ঠকিয়ে নিজের অংশের চেয়ে বেশি জমি নিজের নামে দলিল করে নেওয়া।
>> সহ উত্তরাধিকারীকে ঠকিয়ে নিজের অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রি করা।
>> অবৈধ দখল।
>> সহ উত্তরাধিকারীর জমি জোরপূর্বক দখলে রাখা।
>> অবৈধভাবে মাটি কাটা, বালি উত্তোলন ইত্যাদি।
>> জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করা।
>> বিনা অনুমতিতে ভূমির উপরের স্তর (টপ সয়েল) কেটে নেওয়া।
>> অধিগ্রহণের আগে জমির মূল্য বাড়ানোর উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত মূল্যে দলিল নিবন্ধন।
>> জনসাধারণের ব্যবহার্য, ধর্মীয় বা দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জমি দখল।
>> বিনা অনুমতিতে পাহাড় বা টিলার পাদদেশে বসতি স্থাপন।
>> আবাসন খাতের ডেভেলপারের জমি, ফ্ল্যাট হস্তান্তর ইত্যাদি সম্পর্কিত অপরাধ।
>> সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের জমি ইত্যাদি বেআইনি দখল।
>> নদী, হাওর, বিল ও অন্যান্য জলাভূমির শ্রেণি পরিবর্তন।
>> অবৈধ দখল গ্রহণ ও দখল বজায় রাখতে পেশীশক্তি প্রদর্শন।
>> পাশ্ববর্তী ভূমি মালিকের জমির ক্ষতি করা।
>> অপরাধ সংঘটনে সহায়তা বা প্ররোচনা ইত্যাদি।