গৃহকর্মীকে ‘হারপিক খাইয়ে’ নির্যাতন, গৃহকর্ত্রী গ্রেপ্তার

টয়লেটে আটকে ‘হারপিক খাইয়ে’ দেওয়াসহ গৃহকর্মীর ওপর নানা ধরনের নির্যাতনের অভিযোগে রাজধানীর কলাবাগান এলাকা থেকে এক গৃহকর্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2022, 06:02 PM
Updated : 20 Jan 2022, 06:02 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে হাতিরপুল এলাকা থেকে গৃহকর্ত্রী সুমিকে গ্রেপ্তার করেন র‍্যাব-২ এর সদস্যরা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের নিউমার্কেট জোনের সহকারি কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি র‍্যাব হেফাজতেই রয়েছেন।

নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর বাবা মোহাম্মদ বেলালের বরাত দিয়ে তিনি জানান, সুমির বাসায় দেড় বছর ধরে কাজ করছিলেন তার ১৫ বছরের কিশোরী মেয়ে। সেখানে শুরু থেকেই মেয়ের উপর নির্যাতন চলছিল।

পুলিশ কর্মকর্তা ফারুকুজ্জামান বলেন, “নির্যাতনের এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে বুধবার গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।”

তিনি জানান, মেয়েটির বাবা অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে আসলে তাদের পরামর্শেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার সুমির বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন বেলাল।

পুলিশের নিউ মার্কেট জোনের সহকারি এই কমিশনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়েটাকে যেভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে, তা এর আগে কখনও দেখিনি"।

তার বাবা বেলাল নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, “ছোটখাটো কোনো ভুল হলেই মারধর করত। কয়েকদিন আগে তারা মেয়েকে বাসার টয়লেটে আটকে রেখে নির্যাতন করে। তারপর হারপিক খাইয়ে দিয়েছিল।

“তারা আমাকে মেয়ের সাথে দেখা করতে দিত না। আমরা দেখা করতে গেলে ভেতরে ঢুকতে দিত না। শুধু মোবাইল ফোনে কথা বলতে দিত। আর মোবাইলে নির্যাতনের কথা না বলার জন্য ভয় দেখানো হতো।”

এর আগে তার মেয়ে একই এলাকায় সুমির মা লাভলী ইউসুফের বাসায় দীর্ঘ সাত বছর ধরে গৃহকর্মীর কাজ করেছে জানিয়ে বেলাল বলেন, “ম্যাডাম যখন ছিল মেয়েটাকে অনেক আদর করত।

“আমার মেয়ে সাত বছর ধরে লাভলী ম্যাডামের বাসায় কাজ করত। করোনায় ম্যাডামের মৃত্যুর পর তার মেয়ে সুমির কাছে থাকত। গত দেড় বছর ধরে সুমি আমার মেয়েকে নির্যাতন করত।”

দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক বেলাল জানান, পরিবারসহ রাজধানীর হাজারীবাগে থেকে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন।  দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়ায় মেয়েকে অন্যের বাড়িতে কাজে দিতে বাধ্য হন। তাদের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানায়।