চাকরির বয়সসীমা না বাড়ালে ‘কঠোর’ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

সব ধরনের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে ‘স্থায়ীভাবে’ বাড়ানোর ঘোষণা না দিলে ‘কঠোর’ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদ’ ব্যানারে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2022, 12:34 PM
Updated : 18 Jan 2022, 12:34 PM

চার দাবিতে তাদের চলমান কর্মসূচিতে রোববার ‘পুলিশের লাঠিপেটার’ প্রতিবাদে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনকরীদের মুখপাত্র ইমতিয়াজ হোসেন।

তিনি বলেন, “সরকার আমাদের বার বার রাস্তায় নামাতে বাধ্য করছে। আমরা শেষ বারের মত সরকরকে সময় বেঁধে দিতে চাই।

“আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা না বাড়ালে আমরা সংবাদ সম্মেলন করে সারা দেশে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

রোববার নীলক্ষেত ও মিরপুরে আন্দোলনকারীদের সমাবেশে চাকরিপ্রার্থীদের ওপর ‘পুলিশ হামলা চালিয়েছে’ বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদের সদ্য সচিব মানিক হোসেন রিপন। ওই ঘটনায় ‘প্রায় অর্ধশত’ আন্দোলনকারী আহত হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

রিপন বলেন, “বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর। এই সীমা বাড়ানোসহ চার দফা দাবি বেশ কয়েক বছর ধরেই রয়েছে, যদিও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।

“চাকরিতে স্থায়ীভাবে বয়সসীমা বৃদ্ধিসহ চার দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছি।”

কিন্তু সরকারের সাড়া না পাওয়ায় আবারও আন্দোলনে নামতে হয়েছে জানিয়ে রিপন বলেন, “মহামারীর মধ্যে নিয়োগ বন্ধ থাকায় যারা ক্ষতির মুখে পড়েছে, তাদের জন্য দুই দফা সুযোগ দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাদের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গিয়েছিল, গত সেপ্টেম্বরেও তাদের সরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

“কিন্তু মহামারী প্রকোপ অব্যাহত থাকায় আরেক দফা সুযোগ দেওয়া হয়। বলা হয়, ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাদের বয়স ৩০ বছর হয়েছে, তারাও আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য সব সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন।”

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আন্দোলনকারী সমন্বয়ক তাসলিমা লিমা বলেন, “গত বছর ১৯ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘ব্যাকডেটের নামে বয়স ছাড়ের প্রহসন’ করেছে, যা সকল শিক্ষার্থীর জন্য বৈষম্যমূলক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

“কেননা করেনাভাইরাস সকল শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের দুই বছর পিছিয়ে দিয়েছে। তাই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।”

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল, পরিস্থিতি অনুযায়ী বাস্তবতার নিরিখে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, কিন্তু চরম দুর্ভোগে দীর্ঘ সেশনজট ও করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দুই বছরের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পরও ইশতেহার এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।”

চাকরিপ্রার্থীদের চার দাবির অন্যগুলো হল- নিয়োগে দুর্নীতি-জালিয়াতি বন্ধ করা, নিয়োগ পরীক্ষার (প্রিলিমিনারি ও লিখিত) প্রাপ্ত নম্বরসহ ফল প্রকাশ করা, চাকরিতে আবেদনের ফি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা করা ও একই সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে সমন্বিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা।

অন্যদের মধ্যে আন্দোলকারীদের নেতৃত্বে থাকা ইসমাইল সম্রাট, ওমর ফারুক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আনোয়ার সাকিন, নিতাই সরকার, সুমনা রহমান, মার্জিয়া মুন হক, শারমিন সুলতানা, মইনুল হোসেন, এম.এ আলী, ইবনে তানজির, অক্ষয় রায়, ফকির আল মামুন, তানভির হোসেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।