ঢাকার ওসামানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন কয়েকটি দপ্তারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়।অন্যান্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি আশ্রায়ন প্রকল্পের কথাও সেখানে আসে।
পরে ব্রিফিংয়ে এসে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, “আশ্রয়ন প্রকল্পের কাঠামো নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ডিসিদের পক্ষে একটি প্রস্তাব ছিল বহুতল ভবন করা যায় কিনা। বহুতল ভবন করলে সেটি স্থায়ী হবে, আপনারা সবাই বুঝতে পারেন।
“কেন করি না সেটা হচ্ছে যে, একটা বহুতল ভবন করতে যে টাকা খরচ হবে, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর যে প্রত্যাশা বা নির্দেশনা, বাংলাদেশে মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না। সেক্ষেত্রে কিন্তু ওটাকে কাস্টমাইজ করার জন্য এই প্রস্তাবটা বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। বহুতল ভবন করা মানে হচ্ছে এখানে ৫০ বছর থাকা।”
মুখ্য সচিব বলেন, ছিন্নমূল পরিবারগুলোর আশ্রয়নের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এই আশা নিয়ে যে, সেখানে থোকা তারা নিজেদের অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে পারবে।
“সেজন্য আমরা পারমানেন্ট স্ট্রাকচারে যাইনি। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় ডিসিদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সেই নির্দেশনাগুলো পালন করে বাস্তবায়ন করা।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে নেওয়া উদ্যোগে সারাদেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা করে তাদের জমিসহ ঘর উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘মুজিববর্ষে কেউ গৃহ ও ভূমিহীন থাকবে না’- বঙ্গবন্ধুকন্যার এই ঘোষণা বাস্তবায়নে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে ২ শতাংশ জমির সঙ্গে ঘর পেয়েছেন সোয়া এক লাখের বেশি পরিবার৷
মুখ্য সচিব বলেন, কৃষি জমি নষ্ট করে আশ্রয়ন প্রকল্পের কোনো বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে না। ৯৯ বছরের জায়গায় এ প্রকল্পে ৩০ বছরের নীতিমালা করার প্রস্তাব করেছিলেন ডিসিরা, কিন্তু সেটাও পরিবর্তন করা হচ্ছে না।
এই জ্যেষ্ঠ আমলা বলেন, কাজ করতে গিয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতার কথা ডিসিরা তাদের আলোচনায় ‘বলেননি’।
“করোনা মহামারীর মধ্যে ডিসি থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তারা সমন্বিতভাবে অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ জন্য আমি গর্ববোধ করি। সামরিক বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে কাজ করেছেন সেজন্য আমি গর্বিত।"
আশ্রয়ন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ প্রকল্পে আট জায়গায় দুর্নীতি পেয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোথায় দুর্নীতির নজির নেই, এটা আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি। এক লাখ ৩০ হাজার বাড়ির ভেতরে ৩০টি বাড়িরই হয়েছে এবং আট জায়গায় কর্তব্যে অবহেলা পেয়েছি। পয়সা মারার জন্য দুর্নীতি করেছে তেমন কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।
“আমি খুব গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আমাদের সহকর্মীরা এটি আত্মার সাথে এবং এটাতে আত্মস্থ হয়ে কাজটা করেছেন। সেজন্য আমার জুনিয়র যারা কর্মকর্তা, আছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এটার জন্য আমি কিছুটা আবেগ আপ্লুত।”
ইতোমধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাজেট বাড়িয়েছে সরকার। আগে যেখানে প্রতি ঘরের জন্য এক লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল, এখন সেটা আড়াই লাখ করা হয়েছে বলে জানান আহমদ কায়কাউস।