নারায়ণগঞ্জে আইভী জিতলেন ৬৬ হাজার ভোটে

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে টানা তৃতীয় বার মেয়র হতে যাচ্ছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। এবার তিনি জয় পেয়েছেন ৬৬ হাজার ভোটে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2022, 12:40 PM
Updated : 17 Jan 2022, 09:25 AM

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) রোববার দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করেন।

তাতে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৭টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার হাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৬২ ভোট।

তাদের ভোটের ব্যবধান ৬৬ হাজার ৫৩৫।

এনিয়ে টানা তৃতীয়বার আইভী নারায়ণগঞ্জের মেয়র নির্বাচিত হলেন। ২০১১ এবং ২০১৬ সালের ভোটেও জিতেছিলেন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার সাবেক এই চেয়ারম্যান।

প্রার্থী

ভোট

প্রতীক

সেলিনা হায়াৎ আইভী

১,৫৯,০৯৭

নৌকা (প্রদত্ত ভোটে প্রায় ৫৫%)

তৈমুর আলম খন্দকার

৯২,৫৬২

হাতি (প্রদত্ত ভোটের প্রায় ৩৩%)

এবিএম সিরাজুল মামুন

১০,৭২৪

দেওয়াল ঘড়ি

মো. মাছুম বিল্লাহ

২৩,৯৮৭

হাতপাখা

মো. কামরুল ইসলাম

১,৩০৫

ঘোড়া

মো. জসীম উদ্দিন

১,৩০৯

বটগাছ

মো. রাশেদ ফেরদৌস

১,৯২৭

হাতঘড়ি

 

 

 

ভোটের ফলাফল মেনে নিলেও পরাজিত প্রার্থী তৈমুর অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে এবং ইভিএমে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’ করে তাকে হারানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এই ভোটে অংশ নিয়ে তাকে সরকারের সঙ্গে ‘খেলতে’ হয়েছে।

“প্রশাসনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইভিএমের কারচুপির জন্য আজকে আমাদের এ পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। এ পরাজয়কে পরাজয় মনে করি না। আমি ধন্যবাদ জানাই জনগণকে, মিডিয়াকে।”

তবে আইভী এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “এত মিডিয়া, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল। ইঞ্জিনিয়ারিংটা কোথায় হল? কী ধরনের সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে, আমি জানি না। দেশবাসী দেখেছে, মিডিয়া দেখেছে, নারায়ণগঞ্জবাসী দেখেছে; এখানে সুন্দর নির্বাচন হয়েছে।

“আমি অভিযোগ করছিলাম, ভোট স্লো হচ্ছিল। যদি স্লো না হত তাহলে এক লাখ ভোটের ডিফারেন্স হত।”

করোনাভাইরাস মহামারীকালে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, যা আগের দুই বারের চেয়ে কম।

এবার ৫ লাখ ১৭ হাজারের ভোটারের মধ্যে ১৯২ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন ২ লাখ ৯০ হাজার ৯১১ জন। এছাড়া ইভিএমে ভোট গৃহীত হয়নি ৪৭১টি।

সহিংস ইউপি নির্বাচনের পর নারায়ণগঞ্জের এই নির্বাচন ছিল গোলযোগহীন।

ইভিএমের ধীর গতির ভোট নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, “নারায়ণগঞ্জে মক ভোটিং হয়েছিল। কিন্তু নারী ভোটাররা সেখানে আসেননি। এ কারণে ভোটারকে লাইনে দাঁড়িয়ে বুঝিয়েও দিতে হয়েছে। হয়ত একটু সময় লেগেছে। তবে যারাই এসেছে, সবার ভোট দেওয়া হয়েছে।”

শান্তিপূর্ণ এ ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও ছিল স্বস্তি।

মধ্য ফেব্রুয়ারিতে বিদায় নিতে যাওয়া ইসির সদস্য মাহবুব তালুকদার বলেন, “নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আমাদের কার্যকালে সর্বশেষ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এটি ছিল আমার অনেক প্রত্যাশার স্থান।

“বিগত ৫ বছরে যতগুলো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে, আমার বিবেচনায় আমাদের প্রথম কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সর্বোত্তম।”