রাতে সংবাদ সম্মেলনে এসে তৈমুর বললেন শঙ্কার কথা

ভোটের প্রচারের শেষ সময়ে এসে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা বললেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার।

শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরে নিজের বাসায় এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশা তিনি করলেও তেমন ‘পরিস্থিতি নেই’।

ভোট কেন্দ্র হিসেবে বিভিন্ন স্কুলে সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারির ব্যবস্থা থাকলেও সেসব ‘খুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার’ তথ্য পেয়েছেন দাবি করে তা যাচাই করার আহ্বান জানান হাতি প্রতীকের এই প্রার্থী।

তৈমুর বলেন, “এখন নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বা প্রশাসন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিসি ক্যামেরাগুলো খুলে নেওয়ার জন্য। এটা কী ইন্ডিকেট করে? এটা কী বোঝায়? এটার সাইন অ্যান্ড সিম্পটমটা কী?

তিনি বলেন, “আমি মনে করি হঠকারিতা করার জন্য, ভোট চুরির জন্য, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করার জন্য বা পুলিশি নির্যাতন চালানোর জন্য এই সিসি ক্যামেরাগুলো তারা খুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।”

প্রশাসনসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তৈমুর বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে আপনি দয়া করে এই সিসি ক্যামেরাগুলো রাখার ব্যবস্থা করেন।”

এবার এ সিটির সব কেন্দ্রে ভোট হবে ইভিএমে। এ কার্যক্রম নির্বাচনী এজেন্টের উপস্থিতি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে তৈমুর বলেন, “ওখানে শোনা যাচ্ছে যে, একজন করে অপারেটর দেওয়া হবে। এই অপারেটর যেন নিজে কোনো দায়িত্ব পালন করতে না পারে, আমাদের এজেন্ট ছাড়া।

“আমাদের এজেন্ট থাকবে এজেন্টদের উপস্থিতিতে কোনো অপরাটের যদি কোনো দায়িত্ব পালন করে, মেশিনটি মেরামত করতে হয় বা মেশিনের ব্যাপারটা দেখতে হয়, তাকে অবশ্যই আমাদের যে এজেন্ট আছে এজেন্টের সামনে করতে হবে।”

এজেন্টরা যাতে কেন্দ্রে থাকতে পারে এবং তাদের যাতে কেউ বের করে না দিতে না পারে, তার নিশ্চয়তা দাবি করে তিনি বলেন, “এজেন্টদের নিরাপত্তা দিতে হবে। এই ব্যাপারটা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চয়তা দিতে হবে।”  

নির্বাচনে বহিরাগতরা ‘প্রভাব বিস্তার’ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন এমপিকে… তিনি সেখানে লোক সরবরাহ করবেন।

“তারা সেখানে ব্যাপারটাকে তাদের পক্ষে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন। এভাবে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে, বিভিন্ন হোটেলে, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে, তারপর সার্কিট হাউজে ডাক বাংলায় বহিরাগত লোকজনে ভরে গেছে।

“এই লোকগুলি আমি মনে করি তারা এখানে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, উসকানিমূলক বক্তব্য রাখবেন। ভোটের দিনে তাদের কোনো কাজ নাই। তারা যেন এই নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করতে না পারে।”

ভোটের দিন রাস্তাঘাটে চলাফেরায় আইডি কার্ড রাখা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়ে তৈমুর বলেন, “আইডি কার্ডের বাইরে কোনো বহিরাগত লোক যেন নারায়ণগঞ্জ শহরে ইলেকশনের দিন চলাফেরা করতে না পারে কোনো গোলযোগ করতে না পারে।”

ভোটের ফলাফল ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, “সবগুলো ভোটের রেজাল্ট আমাদের যে এজেন্ট আছে এজেন্টের কাছে তাদের উপস্থিতিতে ভোট গণনা করে প্রিন্ট সাথে সাথে দিয়ে দিতে হবে এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা দেওয়া কোনো কঠিন বিষয় না।     

বিএনপি নেতা তৈমুর দলের অমতে ভোট করতে গিয়ে দলীয় পদ থেকে ‘অব্যাহতি’ পেয়েছেন। আগামী রোববারের ভোটে তৈমুরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী টানা দুই বারের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।