স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা

স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে ফেরার দিনটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে বাংলাদেশে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2022, 03:14 AM
Updated : 10 Jan 2022, 04:15 AM

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ২৪ দিন পর পাকিস্তানে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরেছিলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিব। দিনটি জাতির জনকের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

দিবসটি উপলক্ষে সোমবার ভোরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসের কর্মসূচি।

সকাল ৭টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি সেখানে মোনাজাতে অংশ নেন।

জাতির পিতার ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার জানান।

স্বাধীন বাংলাদেশে পা রাখার পর তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে আসছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১০ জানুয়ারি, ১৯৭২। ছবি: নাসির আলী মামুন/ফটোজিয়াম

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন থেকে পাকিস্তানি সেনারা আটক করে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়। ওই রাতেই বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর শুরু হয় বর্বর হামলা।

পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান বঙ্গবন্ধু। তার ডাকে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তি সংগ্রামে।

নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর বিশ্ব জনমতের চাপে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার। মুক্তির পর তিনি লন্ডন যান। সেখান থেকে ১০ জানুয়ারি দিল্লি হয়ে পৌঁছান ঢাকায়।

লাখো জনতা সেদিন তাদের প্রিয় নেতাকে তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে খোলা ট্রাকে করে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) নিয়ে যায়।

বঙ্গবন্ধু সেখানে সদ্য স্বাধীন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। প্রায় কুড়ি মিনিটের সেই আবেগঘন বক্তৃতায় তিনি বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দিদশায় তিনি ফাঁসিকাষ্ঠে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন, বাঙালিকে কেউ ‘দাবায় রাখতে’ পারবে না।

“আমার বাংলাদেশ আজ স্বাধীন হয়েছে। আমার জীবনের সাধ আজ পূর্ণ হয়েছে। আমার বাংলার মানুষ আজ মুক্ত হয়েছে।”