প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের আপিল বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।
আদেশের পর নাকানো এরিকোর আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, “আগের যে আদেশ ছিল তা বর্ধিত করেছেন আদালত। ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মায়ের কাছে থাকবে দুই শিশু। বাবা দেখা করার সুযোগ পাবেন।”
দুই শিশুকে বাবার জিম্মায় দিয়ে হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এসেছেন মা নাকানো। তার আপিল শুনানির ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ডিসেম্বর এক আদেশে দুই শিশুকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মায়ের কাছে রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছিল আপিল বিভাগ।
সোমবার বাবা-মায়ের পাশাপাশি দুই শিশুও আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিল।
আদালতে মায়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও অ্যাডভোকেট শিশির মনির। আর বাবার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।
শিশির মনির বলেন, আপিল বিভাগ সোমবারের আদেশে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মা নাকানো এরিকোকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছে।
জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।
মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গতবছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী। তিনি হাই কোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলে বিচারক।
কিন্তু ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাই কোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেয়। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সাথে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।
হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা তা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেয়।