প্রধান বিচারপতির শপথ নিলেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী

দেশের ত্রয়োবিশংতম প্রধান বিচারপতি হিসেবে সংবিধান ও আইনের ‘রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধানের’ শপথ নিলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

বঙ্গভবন প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2021, 10:15 AM
Updated : 31 Dec 2021, 12:01 PM

শুক্রবার বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছ থেকে তিনি নতুন দায়িত্বের শপথ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন।

বঙ্গভবনের দরবকার হলে শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। পরে নিয়ম অনুযায়ী শপথনামায় সই করেন নতুন প্রধান বিচারপতি। শেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করমর্দন না করে তারা কনুইয়ে কনুই ছুঁইয়ে এলবো বাম্প করেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের বিচারক হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নাম ঘোষণা করা হয় সরকারের তরফ থেকে। দেশের বিচারাঙ্গনের শীর্ষ এই পদে তিনি বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন।

শপথবাক্যে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, “প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হইয়া সশ্রদ্ধচিত্তে শপথ (বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা) করিতেছি যে, আমি আইন অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সহিত আমার পদের কর্তব্য পালন করিব; আমি বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করিব; আমি বাংলাদেশের সংবিধান ও আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধান করিব; এবং আমি ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হইয়া সকলের প্রতি আইন-অনুযায়ী যথাবিহিত আচরণ করিব।”

মহামারীর কারণে এবার প্রধান বিচারপতির শপথ অনুষ্ঠান হয় সীমিত পরিসরে। সর্বোচ্চ ৬০ জনের বসার ব্যবস্থা রাখা হয় দরবার হলে।

শপথ অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ আগে নির্ধারিত পোশাকে দরবার হলে প্রবেশ করেন নতুন প্রধান বিচারপতি। তার কিছুক্ষণ পর রাষ্ট্রপ্রধান আবদুল হামিদ ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনা একসঙ্গে সেখানে প্রবেশ করেন। রাষ্ট্রপতি শপথ অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়ালে নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।

এমনিতে সরকারের মন্ত্রী, আইনাঙ্গনের পদাধিকারী এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পান। তবে এবার স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়িতে অতিথির সংখ্যা কম।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, তিন বাহিনী প্রধান, অ্যাটর্নি জেনারেল, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, উচ্চ আদালতের দুই বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।  

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর জন্ম ১৯৫৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। তিনি ১৯৮১ সালে ঢাকা জজ কোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে হাই কোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৯ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।

২০০৯ সালে হাই কোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ২০১৩ সালে আপিল বিভাগের বিচারক হন।

সংবিধানের ৯৬ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা ৬৭ বছর পর্যন্ত পদে থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দুই বছর প্রধান বিচারপতির আসনে অধিষ্ঠিত থাকছেন।

তিনি ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিকীও এক সময় আপিল বিভাগের বিচারক ছিলেন।