শুক্রবার রাতে র্যাবের হেলিকপ্টারে করে মারুফা আক্তার ও সেলিম রেজাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তেজগাঁও বিমানবন্দরে নামার পর তাদের দুটি আলাদা অ্যাম্বুলেন্সে করে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়।
এ নিয়ে বার্ন ইন্সটিউটে লঞ্চের আগুনে গুরুতর দগ্ধ সাত জন ভর্তি রয়েছেন। আর একজনের পোড়া কম হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শুকবার রাত আটটার দিকে মারুফাকে র্যাবের অ্যাম্বুলেন্সে করে বার্ন ইন্সটিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
মারুফার ভাই মোহাম্মদ রোমান বলেন, ১৩ বছর ও ১৫ বছরের দুই মেয়েকে নিয়ে লঞ্চে বরগুনা যাচ্ছিলেন মারুফা। আগুন লাগার পর ছোট মেয়েকে নিয়ে মারুফা বের হতে পারলেও বড় মেয়ের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। তার ছোট মেয়ের হাত পুড়ে গেছে।
একটু পর আরেকটি অ্যাম্বুলেন্সে আনা হয় সেলিম রেজাকে (৪৫)।
এ দুজনকে ঢাকার আনা হয় র্যাবের তত্ত্বাবধানে। এ নিয়ে পুলিশের বিশেষ এ ইউনিটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই র্যাব দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেয়। পরে গুরুতর দগ্ধ দুইজনকে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়।
র্যাবে মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন হেলিকপ্টারে করে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে আগেই ভর্তি ৫
হেলিকপ্টারে করে দুজনকে আনার আগে থেকেই শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট হাসপাতালে ভর্তি থাকাদের একজন জিয়াসমিন।
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে আগুন লাগার পর এ নারী দুই সন্তানকে নিয়ে কোনোরকম বেঁচে গেলেও চিকিৎসা নিতে ঢাকায় আসার পথে হারান সাত বছরের মেয়ে মাহিনুরকে।
অভিযান-১০ লঞ্চে দগ্ধ আরও এক পরিবারের চারজনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে। তারা হলেন- বাচ্চু মিয়া (৫১), তার স্ত্রী শাহিনুর বেগম (৪৫), মেয়ে ইসরাত জাহান (২২) ও ছেলে সাদিকুর (১৬)।
শেষের জনের পোড়া কম হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। বাকিদের ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের জানান, ঢাকার উদ্দেশ্যে পাঠানো ১০ জনের মধ্যে পাঁচ জন সন্ধ্যায় পৌঁছেছেন, তাদের ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকার সদরঘাট থেকে বরগুনার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া অভিযান-১০ লঞ্চে যখন আগুন লাগে, তখন রাত ৩টার বেশি বাজে। অনেকে ছিলেন গভীর ঘুমে।
চিৎকার চেঁচামেচিতে তাদের ঘুম ভাঙে; কী ঘটেছে বুঝে ওঠার আগেই কেউ দগ্ধ হয়েছেন, কেউ প্রাণ হারিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় প্রায় তিন ঘণ্টা শুক্রবার ভোরের দিকে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। দুপুর পর্যন্ত লঞ্চ আর নদী থেকে ৩৭ জনের লাশ উদ্ধার করার কথা জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা; হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন অন্তত ৭২ জন।
বিআইডব্লিউটিএ বলছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে চারশর মত যাত্রী ছিল। তবে উদ্ধার পাওয়া যাত্রীরা বলছেন আটশ থেকে এক হাজার আরোহী থাকার কথা।
আরও পড়ুন: